বা ঙা ল না মা

প্রাচীন বাংলা-লেখকগণ: তান্ত্রিক বৌদ্ধ লেখক লূইপাদ, বিরূপাদ, শবরীপাদ

Posted by bangalnama on August 31, 2009


চব্বিশ পরগণার পেয়ারা গ্রামে ১৮৫৫ খ্রীষ্টাব্দে মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র জন্ম। তাঁর শিক্ষাজীবনের পুরোটাই কাটে অধুনা পশ্চিমবঙ্গে – ক্রমান্বয়ে হাওড়া জিলা স্কুল, প্রেসিডেন্সি কলেজ (FA), সিটি কলেজ (BA) ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় (MA)-এ পড়াশোনা করেন। ১৯০৮ সালে যশোর জিলা স্কুলে শিক্ষকতা দিয়ে মুহম্মদ শহীদুল্লাহের চাকরিজীবনের শুরু। এরপর চাকরি ও কর্মজীবনের অধিকাংশটাই তিনি কাটিয়েছেন ওপার বাংলায় – বিভিন্ন স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ও সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে শিক্ষকতা ও ভাষা-সংক্রান্ত বিবিধ গবেষণার মধ্যে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা-কালে তিনি বাংলা ভাষার প্রাচীনতম সাহিত্য নিদর্শন চর্যাপদ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। প্যারী শহরের লা সরবঁ (La Sorbonne) বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয় নিয়ে তাঁর গবেষণাপত্র Les Chants Mystiques de Kanha et de Saraha প্রকাশিত হয় ১৯২৮-এ।


চর্যাপদ শুধু বাংলা ভাষার প্রাচীনতম সাহিত্য নিদর্শনই নয়, নব্য ভারতীয় আর্যভাষারও প্রাচীনতম রচনা এটি। খ্রীস্টীয় দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে রচিত এই গীতিপদাবলির রচয়িতারা ছিলেন সহজিয়া বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যগণ। ঐ ধর্মের গূহ্যার্থ সংকেতে ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যেই রচিত হয় এই পদগুলি। ১৯১৭ সালে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের রাজদরবারের গ্রন্থশালা থেকে চর্যার একটি খণ্ডিত পুথি উদ্ধার করেন ও আচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ভাষাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে চর্যাপদের উপর বাংলা ভাষার দাবি বৈজ্ঞানিক যুক্তিসহ সুপ্রতিষ্ঠিত করেন। সমকালীন বাংলার সামাজিক ও প্রাকৃতিক চিত্রাবলি এই পদগুলিতে উজ্জ্বল। সেই কারণে এর সাহিত্যগুণ আজও চিত্তাকর্ষক। বাংলা সাধন সংগীতের শাখাটির সূত্রপাতও এই চর্যাপদ থেকেই।


চর্যাপদের বাঙালী কবি – লূইপাদ, বিরূপাদ, শবরীপাদ-দের নিয়ে মুহম্মদ শহীদুল্লাহের এই প্রবন্ধটি ১৩৫৪ সনের (খ্রী: ১৯৪৭) ফাল্গুন সংখ্যায় ‘শনিবারের চিঠি’তে প্রকাশিত হয়।


12345678910


(কৃতজ্ঞতা: বাসু আচার্য্যের সংগ্রহ থেকে)

Leave a comment