বা ঙা ল না মা

উত্তরণ – একটি শিক্ষামূলক সামাজিক গাথা

Posted by bangalnama on March 19, 2009



জর্জ বার্কার। তোবড়ানো চোয়াল। গোঁফ তার কামানো। স্যার হেনরি লরেন্স তার দাদু। জর্জ ঘটি। আজ তার পেছনে শ্বেতশুভ্র বিমানবন্দর। তার সামনে দিগন্তবিস্তৃত শহর তিলোত্তমা কলকাতা। জর্জের বহু প্রাচীন আত্মীয় ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে কুলীনসমাধি লাভ করেছে। সেই সব নাম মর্মরের দেওয়ালে উৎকীর্ণ আছে। কিন্তু আজ, এখন, তাকে মনে রাখতে হবে যে তার শিকড় কিন্তু অক্সফোর্ডশায়ারের তৃণময় প্রান্তরের মধ্যে অবস্থিত যতিচিহ্নের ন্যায় একটি ক্ষুদ্র গ্রামে মাত্র। আর তাই, ঠিক সেই কারণেই, শহরের সহস্র রাস্তার মধ্যে এই মুহূর্তে লক্ষ ট্যাক্সির কোলাহল ও ঝঞ্ঝাবাত সামলে কুজ্ঝটিকাময় দিগন্তের দিকে তাকিয়ে তাকে নিজে হাতে বেছে নিতে হবে সে কোন দিকে যাবে। উত্তর, না দক্ষিণ। জর্জ নিজের পরণের পোষাকের দিকে একবার তাকালো। গনগনে চুল্লীর মতো আকাশের দিকে চোখ তুলে বললো, বলো, এবার আমি কী করবো? ছায়াপিন্ড দিলো না উত্তর। জর্জ ডান হাত তুলে দুই ভুরুর ওপর বেয়ে আসা ঘাম সপসপে করে মুছে নিলো। সে তার উত্তর পেয়ে গেছে। ‌ইন্ডিয়ান মিরর স্ট্রীট হবে তার আস্তানা। উত্তর চেয়ে জর্জ উত্তর পেয়েছে, এজন্য তাকে অনেক কিছু খোয়াতে হবে, যার একটি, অবশ্যই, তার পরণের পোষাক।




রফি আহমেদ কিদওয়াই রোড, তাকে প্রায় নব্বই ডিগ্রীতে কেটেছে লেনিন সরণী, কেটে ফেলায় উল্টোদিকটার নাম হয়েছে নির্মলচন্দ্র দে স্ট্রীট। ওদিকে, মানে অক্রূর দত্ত লেন, ক্রীক রো, কিংবা গোকুল বড়াল স্ট্রীটের দিকে আমরা তাকাবো না। এমনকি উত্তর-পশ্চিম দিকে বিপ্লবী অনুকূল চন্দ্র স্ট্রীটে উপস্থিত ক্যালকাটা গার্লস স্কুল ও কামালয় সেন্টার, এমন দৈব দ্ব্যহস্পর্শকেও আমরা অনায়াসে উপেক্ষা করবো। হেথা নয়, অন্য কোনোখানে, নীচে, চোখ রাখুন। ওই যে জর্জ, পরনে একটি বাঁদিপোতা গামছা, হাজি মহম্মদ মহসীন স্কোয়ারের সামনে ডিস্পেন্সরি থেকে সে একটি খয়েরি খামে কি যেন গোপনে কিনে দেদার বক্স লেন দিয়ে চার্চের দিকে পেছন রেখে ডক্টর লেন, পূরণ চন্দ্র নাহার অ্যাভিনিউ এইসব আঁকাবাঁকা পথে গিয়ে আবার সেই ইন্ডিয়ান মিরর স্ট্রীটের অকুস্থলে আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু সঁিড়ি দিয়ে ওপর অবধি উঠতে পারেনি, নীচে লোহার কারখানায় টিভিতে মোহনবাগানের খেলা হচ্ছে। জর্জ সেখানে এঁটুলির মতো আটকেছে। ভোরের বাসী সিঙাড়ায় টক টক ঢঁেকুরে তার অস্বস্তি হলেও, পেটে তার বাড়বানল, সর্বগ্রাসী ক্ষুধা। কে যেন তাকে কানে কানে এসে কুডাক দিচ্ছে, দুটো ডালপুরী দিয়ে অল্প বোঁদে প্যঁাদালে মন্দ হতো না। মানুষের জীবন কী? সে কি কেবলই কৃমি? কেবলই যাতনাময়? এইসব ভাবতে ভাবতে জর্জ দাঁত কিড়মিড় করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ছে, মোহনবাগান মাঝে মাঝেই গোল খাচ্ছে, তাই আবার জেগে উঠছে। প্রাগুক্ত গামছা তার জীবনের বিভঙ্গে এখন অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত। মধ্যে মধ্যে চা আনতে যাওয়া, গামছা, রাস্তার ধারে পাকানো বিড়ি টানতে টানতে রাজা উজীর মারা, গামছা, সন্ধ্যেবেলা চুল্লুর ঠেকে বীয়ার কিনতে যাওয়া, গামছা। এমনকী, এহ বাহ্য, সেও গামছা। কেবল জর্জ, একা জর্জ, অম্বলে, সিগারেটের অনির্বাণ ধূমে আর ধূলিমাময় চায়ের জীবাণুকীর্ণ পটভূমিকায় তার পঞ্চবটীতে অচঞ্চলা লক্ষ্মীর ন্যায় স্থির। কটিসংলগ্ন এই অকিঞ্চিৎকর বস্ত্রখন্ডটির সান্নিধ্যে, আর্দ্রতার তারতম্যের সরল দোলগতিতে তার যথাকথঞ্চিদরূপে কালযাপন হয়ে চলেছে।




সময় বহিয়া যায়, নদীর স্রোতের প্রায়, চিরস্থির নদীনীর হায় রে জীবন নদে এইসব। এমন এক শ্রাবণমুখর বরষাদিন, জলরাশির ধারা স্রোতের ন্যায় কবরী বহিয়া, পাইপ বাহিয়া অনন্তর অবিরাম ঝরে চলেছে, তখন, সেই পঞ্চবটীসংলগ্ন পাড়ায় একটি ফুটবল ম্যাচ বা তদনুরূপ কোনও অতিতুচ্ছ কারণে জর্জের জীর্ণ চীরবসনটি স্খলিত করে বারমুন্ডা পরিধান করার প্রয়োজন হয়ে পড়লো। বুড়ো আঙুলের পরিমাণ আত্মা যেমন বাসাংসি জীর্ণানি বলে যথা বিহায় হয়, তেমন ঝড়ে উড়ে যাওয়া শিউলির মতো মাটিতে লুটিয়ে পড়া গামছাটি পদদলিত করতে করতে জর্জ হঠাৎ শিউরে উঠলো, তার শিরদাঁড়া বেয়ে একটি বরফশীতল স্রোত ককসিক্স পর্যন্ত গিয়ে প্রতিধ্বনিত হলো, প্রতিফলিত হয়ে বার বার ফিরে আসতে লাগলো, কারণ, তার মনে হলো যেন একজোড়া নারীচক্ষু পেছনের জানালা দিয়ে নিশ্চুপে তার সংকুচিত, ভীত, লঘু কিন্তু নিবিড়নিতম্বদুটিতে দৃষ্টিপাত করে চলেছে। যাযাবর ব্যাধ যেমন অতর্কিত আক্রমণ মোকাবিলা করতে সততই প্রস্তুত, তেমনই এক অপূর্ব প্রতিবর্ত ক্রিয়ায় জর্জ এক ঝটকায় ঘুরে দাঁড়ালো। তার চোখে লাভার হলকা, তার এক হাত মুষ্টিবদ্ধ, অপর হাত ভূলুন্ঠিত কটিবসন পুনরুদ্ধারে নিরত। তথাপি, সেই বিহ্বল সংকটের মুহূর্তে সে তার গৃধ্নদৃষ্টিতে গৃহস্বামীর অনূঢ়া কন্যার ঘনকৃষ্ণ অক্ষিদুটি খড়খড়ির অন্যপারে বিস্ফারিত হতে দেখলো। সেই দারুণ জানালার দুই দিকে দুই আদম ও ঈভের কপাল, কপোল ও ওষ্ঠ রঞ্জিত হয়ে উঠলো। জর্জের নিস্তরঙ্গ জীবনে এক অদ্ভুত আলোড়নের সঞ্চার হলো। সে কি জানতো, তার মধ্যে নিহিত এই বিপুল শক্তির ভান্ডার? কি এই শক্তির উৎস? এ কি জন্মগত? সে থাকতে পারলো না, প্রচন্ড বৃষ্টিতে ছাতাহীন জর্জ, হাঁটতে লাগলো, হাঁটতে লাগলো … এরপর, দেউটি নিভিল একে একে, ছায়া ঘনাইল রে, মেগাওয়াটের ঘাটতি মোমের মৃদু আলোয় মায়াময় হয়ে উঠলো। কিন্তু আজ রাতে জর্জ মহাস্থবির, তার ঘরে মোম নেই, তার কলঘরে হোম ছেড়ে বেরোনোর উপায় নেই। সান্ধ্য অভ্যাস, পচা চপ, তাকে শেষ করে দিলো। সার্থক ছোটগল্পের ন্যায়, জর্জেরও, সারারাত, শেষ হয়ে হইলো না শেষ। কেন না আমরা এ বিষয়ে চিত্রকল্প লাভের উদ্দেশ্যে মার্কিন চিত্রকর জ্যাকসন পোলককে স্মরণ করি?




উক্ত ঘটনার মাসাধিকাল পরবর্তী এক সেদিনের সোনাঝরা দিন। সেদিন জর্জের প্রত্যাবর্তন। তার চারিদিকে কেবল বাঙালী অথচ কোনও বাঙাল নেই, ফলে জর্জ একা। এই গাথার প্রথম পর্বে তাকে সুযোগ দেওয়া হয়েছিলো, কিন্ত সে নিজে হাতে জেলুসিল বিছানো রাস্তা পছন্দ করেছে, এর দায় তার নিজের। কিন্তু আজ যে যাওয়ার দিন, আজ তাকে দু্্ঃখ দিলে গৃহস্থের ঘরের অকল্যাণ, তাই বিদায়, বিদায় বন্ধু। বহু ঘটি এই মহোৎসবের নিমিত্ত জর্জের বাসায় জমায়েত হয়েছে, তার মাঝে কি আমরা সেই অনূঢ়া এলোকেশী গাঢ়নয়না চাতকসুন্দরীটিকে দেখতে পাচ্ছি না? ওগো, কেউ তাকে ডাকো! এরা তো সব রাত থাকতে উঠে ঘটিসুন্দর রবীন্দ্রনাথের গলায় মালা দিয়ে একটি করে ভাজা পান্তুয়া ও জেলুসিল খেয়ে মোকদ্দমার কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়েছিলো। আজ প্রভাতে বাসী লুচি সহযোগে তারা প্রাতঃরাশ করে থাবা থাবা চিনি দিয়ে সকলের পয়সায় কেনা দুইশত গ্রাম চিংড়ির শিরা বানিয়েছে। দুপুরে তাই খেয়ে গোঁফের আগায় অল্প ঝোল লাগিয়ে ছাদে উঠে ভুঁড়িতে হাত সঞ্চালন করতে করতে উদ্গার তুলে উচ্চ ডেসিবেলে বিস্ময় প্রকাশ করেছে – আঃ কি খেলাম, কি খেলাম আজ! তবু কেন এই গামছা সম্মিলনী জর্জের আত্মার পরমাত্মীয় নয়? কিসে তার অস্বস্তি? কোথায় তার একাকীত্ব? তার কাছে সব থেকেও কে নেই, কি নেই! তার নিজের লোকের মাঝে বসে তবে কি নিজেরই মুদ্রাদোষে সে একা হতেছে একেলা?




না! জর্জ অকস্মাৎ আর্তনাদ করে উঠলো, তার হাহাকারে বহু স্বেদক্লান্ত ঘটি মধ্যজৃম্ভনে সচকিত হয়ে আপন আপন দংষ্ট্রায় আঘাত করলো, অনিচ্ছায় আপন জিহ্বা দংশন করে মৃদু রক্তপাত ঘটালো। বেদনায় তাদের চক্ষে যেন অশ্রুজলের সঞ্চার হলো। এই স্বেদশোণিতাশ্রু জর্জ সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করলো। সে হঠাৎ বুঝতে পেরেছে, যে কোথায় ভুল, কোন মহানরকের গহ্বরে সে নেমে যেতে চলেছিলো, আত্মবীক্ষণ তাকে আজ নিয়ে এসেছে আত্মসমর্পণের দরবারে – কিন্তু এই ক্ষমাসুন্দর অপার্থিবতায়, মহামানবের চরণসম্মুখে সে যে বড়ো দীন, বড়ো ক্ষুদ্র। আজ যে তার চরিত্রের শুদ্ধি, আজ যে তার নবজন্ম। জর্জ মাথা উঁচু করে এক উজ্জ্বল জ্যোতির্বলয়ের ন্যায় মুখ তুলে পরিষ্কার ভাষায় বলে উঠলো, যে তার মনে পড়ে গেছে, যে সে আদপে, আদিতে, আসলে বাঙাল! অ্যামনেসিয়া নামক রোগের আক্রমণে, বহুদিনের অব্যবহারে, বঞ্চনায়, সে হারিয়ে যেতে যেতে আজ উঠে এসেছে জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ আসনটি নিতে। তাই তো শত চেষ্টার পরেও এই ঘটিসমাজ তার সহ্য হয়নি, তাই তো তার মনের ভিতরে কিসের দ্বিধা, দ্বন্দ্ব, দোলাচল, তাই তো সে আজ শ্রীরামকৃষ্ণের বিছানার নীচে টাকা রাখার মতো পুড়ে গেলো, পুড়ে গেলো শব্দে এই ঘটিস্তান পরিত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছে। তার স্মৃতি আজ নেই, কিন্তু তার শরীরে বইছে টগবগ করে ফুটতে থাকা বাঙাল লহু। সে আজ জয়ী, সে আজ মুক্ত। আপনাকে এই লুকিয়ে রাখা ধূলার ঢাকা ধু্ইয়ে দিতে বিশ্বহৃদয় হতে ধাওয়া আলোয় পাগল প্রভাত হাওয়া আজ আসন্ন।




উপস্থিত ঘটিবৃন্দ অবাক বিস্ময়ে দেখলেন, কিভাবে জর্জ অশ্রুজলে সিক্ত হয়ে করজোড়ে ক্ষমা প্রার্থনা করা মাত্র বিশাল থেকে বিশালাকায় হয়ে গেলো। ঐ মহাশূন্যের ওপার থেকে কী সঙ্গীত ভেসে আসতে লাগলো, কোন ভুবনের পারে শঙ্খ বেজে উঠলো, কোথাও ঢাক, কোথাও কাঁসর বাজতে লাগলো। তাদের শরীরে রোমাঞ্চ জেগে উঠলো। চারিপাশ হঠাৎ ইলিশের, শুঁটকির গন্ধে ম ম করতে লাগলো। গাছে গাছে লঙ্কা ঝুলতে লাগলো। গৃহস্থের রান্নাঘর থেকে অলৌকিকভাবে চিনি অদৃশ্য হয়ে গেলো। বড়ো বড়ো জামবাটি ভর্তি ভাত, তিতার ডাল, মাছের মাথা দিয়ে ডাল, ভারালির বড়া, মৌরলা মাছের টক এইসব আপনা থেকে রান্না হয়ে তাকে তাকে ধঁুয়োতে লাগলো। আরও কতো কি হলো। পুষ্পে পুষ্পে শাখী, কুঞ্জে কুঞ্জে পাখি, এসব তো ছিলই। তাছাড়াও জলের মধ্যে মরালীকে নিয়ে মরাল চলতে লাগলো, স্বর্গ থেকে পুষ্পবৃষ্টি হলো, গুঞ্জরিয়া অলি এসে পুঞ্জে পুঞ্জে ধাইলো, এই পৃথিবী আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে উঠলো। দুটি বাঙাল দেবদূত কলমী শাখ থেকে উড়ে উড়ে নেমে এলেন, এসে জর্জকে বললেন, তুমি আজ থেকে মুক্ত, তুমি আজ স্বাধীন। এসো, চলো, তুমি আমাদের দেশে। সেখানে কেবল খুশি, কেবল খাওয়া, কেবল খেলা, হাসি, গান। আর তেমন তার হজমকারক জল। আর কোনওদিন তোমাকে এ জগতে মাথা নিচু করে থাকতে হবে না। এই বলে তারা জর্জকে আলতো করে তুলে বাঘা যতীনের দিকে নিয়ে গেলো। সকলে যারা এই দৃশ্য দেখলো, তারা ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইলো। স্বর্গ থেকে দৈববাণী হলো – যারা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চাইবে, তাদের মাঝে মাঝে ক্ষমা করা হবে, তাদের স্থান হবে বাকি বাঙালের মাঝে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। আর যারা যবক্ষারজানের ন্যায় মুখবিকৃত করে নিজেদের নকল খোয়াবে দিন গুজরান করবে, তারা বাকি জীবন গামছা পরে, চোঁয়া ঢঁেকুর তুলতে তুলতে জেলুসিল খেয়ে, মোকদ্দমার কথা ভাবতে ভাবতে বাসী লুচি পরিবৃত হয়ে থাবা থাবা চিনির ডেলার মধ্যে পতিত হবে। এই তাদের শাস্তি।


লিখেছেন: গোরা রায়

4 Responses to “উত্তরণ – একটি শিক্ষামূলক সামাজিক গাথা”

  1. Kinjal said

    besh interesting mone holo tobe George Becker er prosongo r Modhyo Kolkata-r reference gulo bujhlam na

    • সোহিনী said

      লেখাটা পড়ে যতদূর মনে হ’ল, জর্জ বার্কার কে লেখক জাস্ট একজন ঈষৎ-বিভ্রান্ত চরিত্র হিসেবে পোর্ট্রে করেছেন – এমন একজন, যে নিজের শিকড়ের কিছুটা খুঁজতে আজ বদ্ধপরিকর। স্যর হেনরি লরেন্সের কবরে নাকি তাঁর শেষ ইচ্ছানুসারে লেখা ছিল: “Here lies Henry Lawrence who tried to do his duty”। এরকম দাদুর পৌত্রও বোধহয় নিজের অন্তরের তাগিদে আইডেন্টিটি খোঁজার কর্তব্য করতে উদ্যত হয়েছে, ব্যাপারটার শেষ দেখার, আত্মপরিচয়ের ক্রাইসিস মেটাবার একটা কম্পালশন চরিত্রটার মধ্যে লক্ষ্য করলাম।

      আর, মধ্য কলকাতা সম্ভবতঃ এই কারণে যে এখান থেকেই জর্জ নিতে চলেছে তার সিদ্ধােন্তর প্রথম পদক্ষেপ — ঘটি-অধ্যুষিত উত্তর না বাঙাল-সাম্রাজ্য দক্ষিণ, কোনদিকে সে নিজের জায়গা খুঁজে নেবে এ ডিলেমার ‌উত্তর যতদিন না তার কাছে পরিষ্কার হচ্ছে, ততদিন সে “ঘরেও নয়, পারেও নয়” ত্রিশঙ্কুর মতো মাঝশহরে বিরাজমান!

      লেখকের মন্তব্য শোনার আশা রাখছি। 🙂

  2. দেবর্ষি said

    বেশ লাগল। 🙂

Leave a comment