বা ঙা ল না মা

ব্যান্ডমাস্টার—‘চাঁদের আলোয় তুষার পুড়তে থাকে’

Posted by bangalnama on April 11, 2009



“জ্যোতি বসু তোমায় সেলাম
তোমার কাছে এলাম।
আমায় তুমি দেবে কী?
-হাতল-ভাঙ্গা হাতুড়ি।”


সবে শুরু হয়েছে বামফ্রন্টের যুগ। জ্যোতি বাবুর কুর্সি তখন বেশ নড়বড়ে। হাত হাতুড়ি ধরবে না টলমলে চেয়ার সামলাবে, এই গবেষণা চলতে চলতে ‘৭৭-এর ১১ই নভেম্বরের ভোরবেলায়, বিপ্লবী থেকে প্রতি-বিপ্লবী সকলকেই ছাই ঘেঁটে পাপ খুঁজে বার করার মহান দায়িত্ব অর্পণ করে, দেড়’শ টাকার পাঞ্জাবি চাপিয়ে চলে গেলেন তুষার। পৈতৃক ঘাটের এক কোণে গণগণে আঁচের জাজিমে মোড়া শুকনো কাঠের বিছানায় গা এলিয়ে শেষ বারের মতো রুমাল নেড়ে গেলেন আমাদের উদ্দেশ্যে–হ্যাঁ আমাদের, যারা তখন ভ্রূণ হয়ে ওঠারই অবকাশ পায়নি।

***

সালটা সম্ভবতঃ দু’হাজার চার কি পাঁচ। কাশীপুর অঞ্চলের ‘এভারেডি’ কারখানার পাশের বাগানবাড়িটা ছিল কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবকের আড্ডা মারার জায়গা। সদ্য-এক্সপেল্-হওয়া নকশালপন্থী থেকে কৃত্তিবাস পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি, উঠতি ক্যামেরাম্যান থেকে শ্মশানের ডাক্তার, কেউ বাদ থাকত না সেই আড্ডায়। মায়া জগতে বিচরণের সকল উপাদানই থাকত মজুত। গেটের বাইরে থেকে ভেতরের দিকে তাকালে অনেক সময় মনে হত কুয়াশার ভিতর থেকে ভেসে আসছে অশরীরীদের গল্পগাছা। কখনো শোনা যেত ভাস্কর-এর ‘শীতকাল..’, কখনো বা কানে আসত ‘নষ্ট আত্মা..’ থেকে পড়ে যাওয়া একের পর এক কবিতা। চলত সারা রাত!


একদিন, আড্ডা যখন বেশ জমে উঠেছে, ডাক্তার তাঁর ব্যাগ থেকে বার করলেন ক্রাউন সাইজ-এর ছোট্ট একটা বই। বিচিত্র প্রচ্ছদ! চোখে বেশ লাগছে। কভার পেজ্ টাকে ডেলিবারেটলি একটা অস্বস্তিকর অপরিষ্কার রূপ দেওয়া হয়েছে। চোখ বুলিয়ে নিলাম—বইয়ের নাম ‘ব্যান্ডমাস্টার’। ক্যাবারিনার চালকের সাথে সেই আমার প্রথম এনকাউন্টার। প্রেম প্রক্রিয়াটা আজও চলছে। ঋত্বিক, সরোজ দত্ত, ব্রেখ্ট-দের পাশে, প্রায় অজান্তেই, যুক্ত হয়ে গেছে একটা নতুন নাম – তুষার রায়। ডিকেইং ফ্যুডালিজম-এর শেষ প্রতিনিধিকে আমার বাঁ-দিক-ঘেঁষে-চলা মনের কোটরে স্থান দিতে কোনো সমস্যা হয়নি, দানা বাঁধেনি কোনো অপরাধবোধ। সাধে কি আর বলে, মানুষের কোনো লজিক্ নেই!

***


১৯৩৫-এর ২৬শে মে নড়াইল মহকুমার জমিদার পরিবারে তুষারের জন্ম। বাবার নাম বনবিহারী রায়, মা বকুলরানী। পাঁচ ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে তুষার তৃতীয়। প্রাথমিক শিক্ষার সময়টুকু বাদ দিলে তুষারের স্কুল-কলেজ সহ জীবনের বেশিরভাগ সময়টাই কেটেছে কলকাতার কাশীপুর অঞ্চলে। রতনবাবুর ঘাটের দিকে যাওয়ার পথে পলেস্তারা-খসা যে বিশাল ভগ্নপ্রায় অট্টালিকাটা দেখা যায়, সেইটাই ছিল তুষারদের বাড়ি—সম্ভবতঃ, রায় দের জমিদারির শেষ নিদর্শন। রাস্তা এবং ঘাটের নামও তাঁর পূর্বপুরুষ, বাবু রতন রায়ের নামে।


এক কালে সব ছিল – লোক-লস্কর, টাকাপয়সা, জাঁকজমক, আমোদ-আহ্লাদ। শেষের দিকে উচ্ছৃঙ্খল জীবনচারণ ছাড়া অবশিষ্ট ছিলনা কিছুই। বাড়ির পুরুষেরা মদ-গাঁজা-আফিম-ঘুমের বড়ি ইত্যাদির মধ্যেই জীবনের রস খুঁজে পাওয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত থাকতেন। পরিবারে চাকরির রেওয়াজ ছিলনা। প্রাসাদোপম বাড়ির বিভিন্ন অংশের ভাড়া থেকেই মাসিক আয়। এই ডেকাডেন্স-এর মধ্যেই তুষারের বেড়ে ওঠা। তিনি অবক্ষয়ের সন্তান – যদিও তার দ্বারা আক্রান্ত নন।


কাশীপুরে এসে তুষার ভর্তি হন ভিক্টোরিয়া হাই স্কুলে। পড়াশুনায় মন ছিলনা, তাই স্কুল ফাইনাল নামক গন্ডিটা আর পেরনো হয়নি। ছবি আঁকার শখ; অ্যাডমিশন্ নিলেন আর্ট কলেজে। কিন্তু পারিবারিক আয় ক্রমশঃ তলানিতে এসে ঠেকার ফলে রং-তুলি-ক্যানভাস কেনার সামর্থ্য থাকলো না। ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজ ছাড়লেন তুষার। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন হয়ে উঠল কলম। তুষারের তরুণ হৃদয়কে যেদিন ক্ষতবিক্ষত করে চলে গেল সেই গুজরাতি তরুণীটি, সেইদিন থেকে স্থায়ীভাবে তিনি কলম হাতে ‘বাতাস পিয়ে’ পথ চলা শুরু করলেন। আজও চলেছেন তুষার। ক্ষয়রোগ তাঁর সৃষ্টিকে গ্রাস করতে পারেনি। নিরন্তর বেজে চলেছে ব্যান্ডমাস্টার-এর স্যাক্সো-চেলো।

***


পূর্ববাংলায় তাঁর উৎসের শিকড় থাকলেও তুষার ছিলেন মনেপ্রাণে কলকাতার মানুষ – ১০০% আরবান। তাঁর কবিতায় বা গদ্যে তিনি সচেতন ভাবেই গড়ে তুলেছেন শহুরে জীবনে অভ্যস্ত এক বল্গাহীন মানুষের অনুভূতির নক্সা। তাঁর লেখায় তুষার জন্ম দিয়েছেন নিজস্ব ডিক্শন-এর। যদিও, তুষার-ভক্তরা মার্জনা করবেন, আমার মনে হয়, তুষারের কবিতার ডিক্শন একান্তই তাঁর নিজের, কবিতার নয়। সেটা ভীষণ ভাবে ওরাল ট্রাডিশন-এর সাথে যুক্ত। সম্ভবতঃ এই কারণেই “তুষারের কবিতা যতটা পাঠ্য, তার চেয়ে বেশী শ্রাব্য”। কবিতার পরিণতি ঘটেছিল কান থেকে চোখের অভিমুখে। সন্দেহ নেই, তুষার এই ব্যাপারে ছিলেন মূর্তিমান ব্যাতিক্রম। যাই হোক, আমি বিশেষজ্ঞ নই, তাই এই সব কথাকে সিরিয়াসলি নেবার কোনো প্রয়োজন নেই; আর, নিলেও কিছু আসে যায় না, কারণ এই দিকেও ‘আমার’ তুষার ‘আমার’ কাছেই আছেন—সেখানে ইমোশন-এর হাতে যুক্তির পরাজয় অবশ্যম্ভাবী!

***


তুষারের মোট বই-এর সংখ্যা পাঁচ। প্রথম বই ‘শেষ নৌকা’। দুই মলাটের মাঝে দুটো গদ্য – ‘শেষ নৌকা’ ও ‘তিমির তলপেটে সুখ’। ক্রাউন সাইজের পকেট বই, অধুনা প্রকাশনীর পক্ষ থেকে প্রকাশিত। গদ্যের আঙ্গিক, তুষারের ভাষায়, “তুলি, রং, ছেনি, হাতুড়ি ও চলচ্চিত্র ক্যামেরার একান্ত ওতপ্রোত বিচিত্র যৌথ আলেখ্য সংশ্লেষ…” প্রথমবার পড়ার পর ঢোঁক গিলে অভীক বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করেছিলাম, “এটা বাংলা!?” প্রিয় তামাকের গুঁড়োগুলোকে সযত্নে ক্যাপস্টান লিফ-এর ভেতর পাকাতে পাকাতে অভীক উত্তর দিয়েছিলেন, “হুমম…মনে তো হয়…ঠিক শিওর নই।” মৃণাল সেন-কে একবার বলতে শুনেছিলাম যে সিনেমা হল সিনেমার এক্সটেনশান। তুষারের গদ্যকে সেইভাবে দেখাই শ্রেয় বলে আমার মনে হয় – বাংলা না ইংরাজী, হিন্দি না গুজরাতি, এই ইন্টেলেকচুয়াল এষণার প্রয়োজন নেই। ‘শেষ নৌকা’ বই-এর চেয়েও বেশী ছবি – ইমেজ। থ্রী ডাইমেনশনাল ক্যানভাসের বিবিধ অংশে ফোকাস করেছেন তুষার – গড়ে তুলেছেন বিচিত্র কম্পোজিশন। কন্টিন্যুয়িটি-তে গ্যাপ ও ব্রেকেজ-এর নান্দনিক সংযোজন কি কখনো মনে করিয়ে দেয় ফ্রেঞ্চ ন্যু ওয়েভ কে? ভাস্কর চক্রবর্তী একবার বলেছিলেন, “তুষারের প্রিয় ছবি ফ্রাঁসোয়া ত্রিফোঁর ‘দ্য ফোর হান্ড্রেড ব্লোজ’।”


নাই বার করা সোনা বৌঠানদের জামার বামে-দক্ষিণে ঝুলে থাকা থলথলে মাংসের ব্যাপারী অচিন বাবুদের মুলুকে এমন এক্সপেরিমেন্ট বৌদ্ধিক হস্তমৈথুনের অস্ত্র হয়ে ওঠার সম্ভাবনা তৈরী করতে পারেনি। ভাগ্যিস্! শুধু এই জন্যেই তুষারকে ধন্যবাদ দেব। বই-এর বিচিত্র নকশার মাঝে খেই হারিয়ে বঙ্গীয় আঁতেলবর্গ সম্ভবতঃ আমার মতই আকাটে পরিণত হয়েছিলেন। কিন্তু তারা যে ইন্টেলেকচুয়াল! নির্লিপ্ত থেকে নিজের মূর্খামিকে ঢাকার সুযোগ তাদের বড়ই কম। অতএব… নিজের বই-এর সমালোচনার নামে ‘শিক্ষিত’ বাঙালীর কালারিং-এর নিদর্শন দেখে ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন তুষার। ডিগরি স্যানিটরিয়াম-এর বিছানায় শুয়ে বন্ধুবর সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়-এর উদ্দেশ্যে লিখেছিলেন, “শেষ নৌকা সম্পর্কে বঙ্গ বাজারে ছিরিকপানি সমালোচনা ও যুব-বাণী মারানো ফচকের ফ্যাচরফ্যাচর ইত্যাদি দেখে মনে হল যে এখনো কোনো মহান নিরীক্ষা বোঝা বা বোঝানোর মত পাঠক তৈরী হয়নি এই দেশে।”


তুষারের পরের বই কবিতার – ব্যান্ডমাস্টার! সিপিআইএমএল-এর সমসাময়িক এই বই নিয়ে বেশী কিছু না বলাই ভালো। অধমের যোগ্যতা নেই কমেন্ট করার। শুধুমাত্র অসীম মাহাতো, অজয় নাগ এবং অঞ্জন মজুমদার-কে ধন্যবাদ জানাতে চাই বইটা প্রকাশ করার জন্যে। দেশ পত্রিকার পাতায় ব্যান্ডমাস্টারের রিভ্যু করতে গিয়ে সনাতন পাঠক (সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়) তুষারকে তরুণ কবিদের মুকুটহীন সম্রাট বলে বর্ণনা করেছিলেন, ফলতঃ, তাঁকে নিয়ে কিছু বলা নিতান্তই বাতুলতা। কি হবে! হমম্, তবে সম্রাটের সাম্রাজ্যের খানিক নমুনার সাথে বর্তমান প্রবন্ধ/না-প্রবন্ধের পাঠকদের পরিচিত করা যেতেই পারে। (আসলে হকারি করা মানসিকতা, বুঝলেন কিনা!)


আমি অঙ্ক কষতে পারি ম্যাজিক
লুকিয়ে চক ও ডাস্টার
কেননা ভারী ধুন্ধুমার ট্রাম্পেটবাদক ব্যান্ডমাস্টার,


তখন প্রোগ্রাম হয়নি শুরু – সারাহ্ টেম্পল নাম্নী ক্যাবারিনা
তখন এমনি বসে ডায়াসের কোণে,


আমি ড্রামে কাঠি দেওয়ামাত্র ওর শরীর ওঠে দুলে,
ড্রিরি-ড্রাঁও স্ট্রোকেতে দেখি বন্যা জাগে চুলে,


তিন নম্বর স্ট্রোকের সঙ্গে নিতম্বেতে ঢেউ
চার নম্বর স্ট্রোকেতে ঝঞ্ঝা ওঠে গাউনের ফ্রীলে
নম্বর পাঁচে শরীর আলগা, বুকের বাঁধন ঢিলে,
আমি তখন ড্রাম বাজিয়ে নাচাই ওকে
মারি এবং বাঁচাই ওকে,
ড্রামের কাঠির স্ট্রোকে স্ট্রোকে
যেন গলাই, এবং ঢালাই করি
শক্ত ধাতু নরম করার কাস্টার,
কেননা, ভারী ধুন্ধুমার ট্রাম্পেটবাদক ব্যান্ডমাস্টার।
আবার বাজাই যখন স্যাক্সো-চেলো
ক্যাবারিনার এলোমেলো
ডিভাইস্-এ দ্বন্দ্ব এলো।


আমার বাঁশির সুরের সুতোয়
দেহের ফুলে মালা
ট্রা রালা লি রালা লা
ঠিক চাবি হাতে দেখি খুলে যায় তালা


(ব্যান্ডমাস্টার – তুষার রায়, ব্যান্ডমাস্টার)


দু’বছর পর, অর্থাৎ ‘৭১-এ, তুষার গদ্য ও কবিতার জগৎ থেকে এক লাফে নেমে এলেন ছড়ার ময়দানে। কিছু প্রকাশিত-অপ্রকাশিত ছড়া নিয়ে হাজির হলো ‘গাঁটছড়া’। বাংলার আদি কবিদের মত প্রথমেই আত্মপরিচয় পর্ব—


লিখেছি মিঠে কড়া নানা রকমের ছড়া
লোকে পড়বে হামড়ে
কেউ বা বলবে বাহ্ কিম্বা দেবে কামড়ে
কেউ করবে গোসা কেউ দাগবে কামান
আমি যেন এক মশা
ছড়া লিখলো তুষার বেরলো বই বাজারে
বিকোবে ঠিক হাজারে।
নীল প্যান্ট লাল জামায় বরাহ খাল পাড়
হরে কৃষ্ণ রাম যেন নায়ক ড্রামা-র।
বাহ্ কী বেশ ভূষা রে
ছড়া লিখে যায় তুষারে।


(আমার নাম তুষার (আংশিক)- তুষার রায়, গাঁটছড়া)


প্রবাহের সমান্তরালে হাঁটা তুষার তাঁর ছড়াকে ব্যবহার করেছেন ছররার মত। অনবরতঃ ফায়ার করেছেন। লোড, ফায়ার, লোড…. অহিভূষণ মল্লিকের ইলাস্ট্রেশন বাড়িয়ে তুলেছে বুলেটের তীক্ষ্ণতাকে। যাইহোক, আবার হকার অবতার ধারণ করি বরং! খাবেন নাকি, গাঁটছড়ার কয়েক আঁজলা তুষারীয় আরক—টুকরো টুকরো শ্লেষ?


(১)
বিপ্লব যবে শুরু হল
তুমি ছিলে পুরোভাগে
ধর-পাকড়ের মাহেন্দ্রক্ষণে
তুমি ভেগেছ আগে
এর ওর ঘরে ঘুরেছ পাহাড়ে
বসেছ নিত্য নব দাঁড়ে দাঁড়ে
তুমি কাকার সঙ্গে কাকাতুয়া
ফের শুয়োরের সাথে দাঁতাল
সারে আটটায় খালাসিটোলায়
মাতালের পাশে মাতাল।


(২)
নির্বাচনে জিতলে পরে নাচতে এলো রায়বেশে
আগে ছিলেন সিপিআইএম
এবার এলেন কংগ্রেসে
কংগ্রেস-এ ফের গ্রেস না পেয়ে
ভাগ্য আবার যায় ফেঁসে
তখন ফিরে এম-টি তুলে নির্যাতিতের ভাই
ধ্বজা তুলে গজা বলেন আমি সিপিআই


(৩)
এ যেন এক ফিকশন্
মাও-এর দেশে ভোজ খেলেন নিক্সন
পেকিং থেকে সাংহাই
ধ্বনি উঠলো – য়্যাঙ্কি চীন ভাই ভাই
মাও-এর এমন ম্যাও ধরা-টা কেমনতরো ডিকশন্!
খোদায় মালুম। খেল দেখালেন বটে নিক্সন।।


তুষারের দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থের নাম ‘মরুভূমির আকাশে তারা’, প্রকাশক আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড। ১৯৭৫-এর সেপ্টেম্বর মাসে এই বই বাজারে আসে। সেই সময় তুষারের জনপ্রিয়তা আকাশ-ছোঁয়া। মুক্ত মেলার কেন্দ্রীয় আকর্ষণ তিনি। যেখানে সেখানে, মাঠে ময়দানে কবিতা আউড়াচ্ছেন। জনতার মনে তুলে দিচ্ছেন ঝড়। বিচিত্র ডেলিভারিতে খেপিয়ে তুলছেন তরুণ-তরুণীদের। কখনো কখনো রাস্তায় কাপড় পেতে বলে উঠছেন, “কিছু ছাড়ুন মশায়..” – শ্রোতারাও রেস্পন্ড করছেন তড়িৎ গতিতে! নিকেলের টুকরোগুলোর সদ্ব্যবহার করছেন তুষার ও তাঁর বন্ধুরা।


‘মরুভূমির আকাশে তারা’-তে তুষারের সমাজ চিন্তা থেকে মৃত্যুচিন্তা, কোনোটাই বাদ যায়নি। সমাজের গ্লানি তাঁকে বারবার স্পর্শ করেছে। কবিতাকে অস্ত্র বানিয়ে নেমে পরেছেন তুষার, ঘোষণা করেছেন—‘ওনলি পোয়েট্রি ক্যান প্রোটেস্ট ভায়োলেন্টলি এ্যন্ড এফেকটিভলি, ওনলি পোয়েট্রি স্পার্টস লাইক বুলেটস’। বেঁচে থাকার ফাঁকে ফাঁকে যখন হাসপাতাল বা স্যানিটোরিয়ামে যেতে হয়েছে, সেখানকার হতাশাগুলোরও ঠাঁই মিলেছে এই বইতে।


তুষারের নিকটজনদের থেকে শুনেছি উনি মৃত্যু-মৃত্যু খেলতে ভালোবাসতেন। নেশায় আচ্ছন্ন হয়ে নাকি অনেক সময় গাড়ি-বাস ইত্যাদির সামনে গিয়ে পড়তেন, আবার মৃত্যু-কে চুক্কি দিয়ে পৌঁছে যেতেন অন্য ফুটপাথে। একবার ৫ টাকার বাজি জেতার জন্যে মৃত্যু অবধারিত জেনেও একগাদা ম্যান্ড্রেক্স খেয়ে ফেলেছিলেন বলে শোনা যায়। স্টমাক পাম্প করে কোনক্রমে বাঁচেন সেইবার। দু’হাত দিয়ে মৃত্যুকে চেপে ধরার এক অদ্ভুত নেশা ছিল তাঁর। জনৈক গুণগ্রাহী অনুজ বন্ধুকে একবার লিখেছিলেন, ‘আই ইউজড টু প্লে ডেথ ডেথ।’ নিজের স্মৃতিফলক-এর জন্য কবিতাও লিখে গেছিলেন তুষার। ‘মরুভূমির আকাশে তারা’-র কোনো এক পৃষ্ঠায় দেখতে পাই:


সেই কবি শুয়ে আছে এইখানে
তিনটি বুলেট নিয়ে শুয়ে, আছে এইখানে
সেই কবি মিছিলের ঠিক পুরোভাগে ছিলো
তিনটি বুলেট তাকে শুইয়ে রাখেনি যেন,
ভ্যালেরি-র মতন ফিরেছে সেই কবি; ফিরে এসে
তিনটে বুলেটে ঠিক মৃত্যুকে কিনে শুয়ে আছে


সেই কবি শুয়ে আছে এইখানে
তার সেনোটাফ-এ ঝরে বসন্তের ফুল, কিছু বর্ষার জল
অবিরল শ্যাঁওলা সবুজ হয়ে ঢেকে দেবে,
তার আত্মার রস নিয়ে গজাবে ব্যাঙের ছাতা
মন্দির গড়বে না, যাবে না সেখানে কেউ
সেখানে নিঃসঙ্গ তিনি শুয়ে থাকবেন
জ্যোৎস্নার সুরভিত হাওয়া বয়ে গেলে পর
শবাধারে লম্বা হবে ফার্নের ছায়া


এইটুকু নিয়ে, ব্যাস্ খুব খুশি হয়ে
জ্যোৎস্নার ফুল আর শ্যাঁওলায় দেখো
ভারী শান্ত ঘুমোবেন কেননা বিনিদ্র তিনি বহুকাল।


দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ বেরোবার কয়েক মাস আগে, সম্ভবতঃ এপ্রিলে, মৌসুমী প্রকাশনীর তরফে তুষারের ‘অ্যাডভেঞ্চার গল্প নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট’ নামে একটা বই বেরোয়। তুষার ‘রহস্য-রোমাঞ্চ’ পত্রিকার নিয়মিত লেখক ছিলেন। একটা গোয়েন্দা উপন্যাসও লিখেছিলেন বলে জানা যায়। ব্যান্ডমাস্টার-এর দ্বিতীয় সংস্করণও প্রকাশিত হয়েছিল এই বছর। তুষারের মৃত্যুর প্রায় এক দশক পরে, তাঁর স্নেহধন্য অজয় নাগের সম্পাদনায় প্রকাশ পায় ‘কালো মলাটের খাতায়’ থাকা একগুচ্ছ কবিতা নিয়ে ‘অপ্রকাশিত তুষার’। তাঁর ছড়ার বইটিও আপডেট করেন অজয়, তুষারের পান্ডুলিপি থেকে নতুন কিছু ছড়া সংযোজন করে।

***


তুষারের এক বন্ধুর লেখায় পড়েছিলাম যে বড়বাজারের কাছে কোনো এক জায়গায় সে (তুষার) একটা সন্দেশ আবিষ্কার করেছিল, যা খেলে মাথার ভিতরে একটা ‘ফট্’ করে আওয়াজ হত এবং তার পরেই ইঁট-কাঠ-কংক্রীটের পৃথিবী হয়ে উঠত গোলাপী আভা যুক্ত স্বপ্নের দেশ। তুষার নাকি অবাক বিস্ময়ে সেই দিকে তাকিয়ে থাকতেন। এর নাকি মজাই আলাদা—মাথায় শুধু ঝুণঝুণ শব্দ আর ট্রাম্পেট-এর ট্রালালালা! খানিকক্ষণ পরে ‘ফট্ ইফেক্ট’ কেটে গেলে (আন-ফট্) ধীরে ধীরে কাশীপুরের ঘরে ফিরে আসতেন তুষার। আচ্ছা, তুষার কি এসকেপিস্ট? মুক্তি পাবার সহজ উপায় খুঁজতেই কি তাহলে ‘ফট্ সন্দেশ’-এর আবিষ্কার, কল্পনার সাহায্য নেওয়া? প্রগতিবাদীরা সমালোচনা করতে পারেন। লিভার পচিয়ে মরে যাওয়া তথাকথিত ‘গুলবাজ’ তুষারকে তাঁরা চিহ্নিত করতে পারেন ডেকাডেন্স-এর ইবলিস হিসাবে। করতেই পারেন। তুষার মার্কসিস্ট ছিলেন না। তাই রাজনৈতিক লাইনকে সেবা করা তাঁর হয়ে ওঠেনি। করতে চানও নি হয়ত। তিনি কবি, শুধুই কবি। আর সব শেষে, এইটাই বলতে চাই, আমার যখন এই পৃথিবীটাকে বালস্য বাল মনে হয়, তখন আমিও একটা এস্কেপ রুট খুঁজি – চলাফেরা করি তুষারের কবিতায়!


পুনশ্চ (একটি সুবিমলীয় স্লোগান-এর ছায়া অনুসরণে) :-


‘আকাদেমি অব ফাইন আর্টস’-এর নাম হোক ‘তুষার আকাদেমি’, ‘বাংলা আকাদেমি’র আখের-গোছানেওয়ালা মুৎসুদ্দী ও পাতি বুর্জোয়ার এলিটিস্ট গোশালা’র পাশে গড়ে উঠুক তথাকথিত সোশাল ড্রপআউটদের সমান্তরাল সামাজিক বিচরণ-ক্ষেত্র!


প্রগতিবাদীদের জন্য টীকা:- কাউন্টার-কালচার মুভমেন্ট-এর হিপিদের সম্পর্কে চারু মজুমদার নাকি সহানুভূতিশীল ছিলেন। ওদের মধ্যে দেখেছিলেন বৈপ্লবিক সম্ভাবনা।


লিখেছেন: বাসু আচার্য্য
টাইপসেট: সোহিনী, বাসু

তুষার রায়; শিল্পী: কৌশিক সরকার, প্রচ্ছদ, 'তুষার রায়ের কাব্য সংগ্রহ' (ভারবি)

তুষার রায়; শিল্পী: কৌশিক সরকার, প্রচ্ছদ, 'তুষার রায়ের কাব্য সংগ্রহ' (ভারবি)

27 Responses to “ব্যান্ডমাস্টার—‘চাঁদের আলোয় তুষার পুড়তে থাকে’”

  1. faiz ahmed said

    bangalnama dekhte ese chokh porlo ei lekha te. bhalo lekha. lekhok ebong bangalnamake dhannobad. tushar rayer bhai chhilen falguni ray. tinio kobi chhilen. onake nia ekta documentary tairi korechhen sharmi pandey. falguni ke niao lekha hok.

  2. Kinjal said

    mot-er upor lekha ta bhalo laglo| kintu ek jaegay bolechhen dekhlam tushar ray-er kobita “pathyo-r cheye beshi srabyo” | distinction ta amar kachhe thik poriskar holo na| je kono kobita-r to sobsomoy yi ekta musicality, ekta hearing component thakei| boi theke kobita porar somoy beshir bhag manush yi kobita-r shobdo gulo nijer mone uchharon kore nen| eyi context-ey pore abar “shesh nouka” ke chhobi ityadi bole ekta visual component arop korata ektu ironical mone holo| French new wave-er sathe tulona ta jakhon eneichhen kichhu particular kobita-r line diye tulona ta arektu analytically tene niye gele bhalo hoto|

  3. basu acharya said

    @ kinjal — lekhatai “moter upor bhalo”lagar janye apnake amar antorik kritagyata ebong dhanyabad janai. 🙂 jaihok, ekjon utsahi pathok-lekhoj hisabe apnar nishchaye jana achhe je kobitar utpatti ghotechilo bolar (oral) madhye diye. likhito kono rup thakto na. arthat chhanda’r (mil noy, karan mil ekta alankar matro) prabesh dwar chhilo kaan. kintu kromosho samaj ebong sabhyatar bikash ghotar fole oral tradition dhire dhire pechhoner shaari te chole jaye ebong ‘pora’ namok bostu ti samne ashe. arthat kaan er bodole prathamik prabeshdwar hoye dnaraye chokh. amra kichhu porle ta ta mone mone aure ni thiki, kintu kane amra seitai shuni jeta amader kachhe anya karor dwara present kora hoy, ebong sei khetre kobhitar gathaner satrhe sathe thake delivery’r bishoyta. onek samay apni kono mass meeting-e giye dekhben bishoy ta fapa howa satteo bolar gune speech tar kadar bere jaye. abar sei speech er transcript samne niye boshle apni onek analytically bishoyta dekhte parben. kobita bolar madhye diye onek samay durbalata dhaka pore. tushar er kobitar khetreo tai. bangla bhasha te nijashya diction nirman jara korechen, tader lekha chokher samne fele dekhle apni ta bujhte parben. kintu tushar er khetre ta noy. porle tushar’er kobita ke (shabda choyon baad diye) notun kichhu lagbe na. kintu shune dekhben! ekta anya jagat. tushar khyati kintu kobitar srabyagun-er janyeri. ar ei motamot (amar soubhagya) sunil-shakti theke utpal kumar, sokolei poshon korechen. 🙂 ar ‘shesh nouka’ kobitar boi na..ota godyer boi. jodio ami eta mani je sekhan theke kichhu angsha quote kore dile pathak (je tushar pore ni) tar subidha hoto. ei karane ami nitantoi khomaprarthi! 🙂

  4. সোহিনী said

    তুষার-ফাল্গুনী-সরোজ দত্তের কবিতা ও গদ্যের সঙ্গে প্রথম পরিচয় করানোর জন্য বাসুকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই, আরো একবার।

    ‘শেষ নৌকা’ বা ‘তিমির তলপেটে সুখ’ নিয়ে আরো বিশদে জানার আগ্রহ রইলো আমারও। ইন ফ্যক্ট, তুষারের গদ্যের স্বাদ পুরোটাই বাদ পরে গেছে। কমেন্ট সেক্শানের মধ্যেও কি অল্প কিছু পাওয়া যেতে পারে? আর, এই লেখার একটা প্রোসেইক সিক্যুয়েল পেলে তো কাথাই নেই।

  5. Kinjal said

    @Basu : bishod ey bolar jonne dhonyobad| 🙂 “srabya” kotha ta ki orthe byabohar korechhen ebar kichhuta bujhlam, jeta na hole apnar eyi lekhati porar moddhe ekta asampurnota thakto | abashyayi kobita path kora ba bolar angik tar interpretation ke aalada matra ene dey| tahole apni bolchhen Tushar Ray-er kobita-r gun ba notunottwo anektai lukiye achhe ki bhabe ta path kora hobe/hoto tar moddhe?

  6. Kinjal said

    * “path kora” – bolte pore ba abritti kore shonano-r kotha bolte cheyechhi|

  7. santhosh said

    Hi, would like to have some information. Which typing tool are you using for typing in Bengali..? Is that tool is applicable to all the Indian languages….?

    Recently, I was searching for the user friendly an Indian Language typing tool and found ” quillapd “. do you use the same…?

  8. I loved this article, like so many others I have read in this blog. Having been brought up outside West Bengal all my life, the new wave of Bengali art and literature is unknown to me. I know next to nothing about the poets who had risen after Bishnu Dey and Jibanananda Das. Therefore, I must thank the author for this post.

  9. basu acharya said

    @ kinjal – apni nishchaye dekhechen je ami likhte giye ek jayegaye bolechhi je tushar er diction ekantoi tnar nijashya, kobitar noy. tushar er kobita (kichhu kichhu baad dile) porte jatona bhalo lage, tar cheye sunte lage onek beshi appealing. mukta mela prangan-e je ‘tushario unmadana’ dekha diyechilo, tar anyatamo pradhan karan kintu eitai. tushar er bachonbhangi-o chhilo khankita awdbhut. onek ta hindibhashi manush jodi bangla bolen, sei rokom. awdbhut uchcharan-e bola A”ami anko koshte pari magic…” manush ke matiye dito.

    • সোহিনী said

      “tushar er bachonbhangi-o chhilo khankita awdbhut. onek ta hindibhashi manush jodi bangla bolen, sei rokom. awdbhut uchcharan-e bola A”ami anko koshte pari magic…” manush ke matiye dito.”

      বাসু,

      তুষারের কন্ঠে আবৃত্তির কোনো রেকর্ডিং আছে কি? ওনার নিজের উচ্চারণে কাব্যপাঠ শুনতে পেলে ভালো লাগত। শ্রাব্যতা নিয়ে যে পয়েন্ট টি উঠে এসেছে, তা-ও আরেকটু ভালোভাবে অ্যাপ্রিসিয়েট করা যেত।

  10. Caesar said

    “দ্রিরি-দ্রাঁহো স্ট্রোকেতে দেখি বন্যা জাগে চুলে”

    Shuru’r onomatopoeic shobdo-tar onyo kothao onyo banan dekhechhilam (Dadu’r Daw-er bodole Daktar-er Daw). Konta thik?

  11. basu acharya said

    @ caesar: ei dike drishti akarshan khorar janye apnake antorik bhabe dhanyabad janai. ota daktar’er ‘da’, dutoi. amiii smriti theke bhul likhechilam. boita dekha uchit chilo…ami sattii dukkhito.

  12. bangalnama said

    Banan ta thik kore diechhi. Caesar ke anek dhonyobad.

  13. amit said

    khub bhalo lekha. bangalnama te sob lekhai khub bhalo hoy. thanks bangalnama. 🙂

  14. Ekak said


    Tushar somporkye jnara janen na/poren ni tader bichar e dekhle lekhati attyonto bhalo o somoyopojogi.
    Tabe Nibandho hisebe alada kore dekhle kichhu bola abossyok.

    Lekhok er lekhar haat ti besh bhaloi laaglo. tathyo guli anek er ee jana , Ajay Naag er lekha
    bhumika ba Utpalkumar/sandipon er Tushar somporkito smriticharon thekei ei ssob jana jaai.
    Kintu tobu lekhok nijer mato kore nibondhoti lekhar chesta korechhen, tai tini dhanyobadarhyo !

    tabe , adhunik lekhok er kachhe ektu beshi prottyasha chhilo. 60/70 ‘s er kobi-lekhok der nie
    lokhte gie tnader lekhar antorlen gunoman o adhunik sahityer aloi tar tulyomulyota bichar na kore
    Jeeboni thuri Khamkhealipona o takthakothito bohemianism ke barnona korar chol ta baddo purono hoe gyachhe.

    emon lekha amra purono krittibashi ba tnader somosamyeek/kichhuta onuj der lekha ghnatle bhuri bhuri paabo.

    ekhon bodh hoi somoy esechhe, Tushar Roy maanei “tupi ta tor khulish” baa bichitro jeebonpronali borna theke ektu sore esse
    onar lekha r gobheer e manonibesh korar.

    Kobi ke bujhte gele Kobir jeebonchorit o abossyok, tabe 60/70 ‘S er
    lekhok der jeebonchorit barnona to anek holo , ebar ektu annyo alo i dekhle hoina ?

    anek asha roilo , ekjon Tushar er pathok hisebe aar ekjon Tushar er pathok er kachhe .

  15. basu acharya said

    @ ekak: apnar response ti peye sattii khub bhalo laglo. haan, tushar ke niye lekhar khetre ami konorokom byakkha-tika etc. diye likhte chaini. tushar er lekha jara porechen tader sathe tar lekhar chhanda theke mil, tar hater lekha theke tar manoshika kriya, sob kichhu niyei alochona kora jeto. alochona kora jeto kriyapod er awdbhut byabohar niye. kintu ei lekha te ami seta korte chai ni. korte chai-o na kokhono. ota gobeshok der kaj, tarai korun. amar kachhe tushar ektu anyarakam. ami tuashr ke gobeshoker chokh diye dekhi na. ashole gobeshok er chokh diye dekhle ritwik keo awswikar korte hoy. marx er sathe jung mishiye je khnichuri tinibaniyechilen, ta janle marx saheb awkka peten. kintu ei bishoygulote amar interest nei karan agei bolechhi je emotion er kachhe jukti barabarer moto haar mane! 🙂 bhalo thakun apni. apnar motamotaer janye abar dhanybad janalum! 🙂

  16. brishti said

    বাসুর কৃপায় কবি ‘তুষার দত্তের’ সাথে পরিচিত হয়ে আমি ধন্য!
    বাসুর লেখার ধরণ মন-কাড়ানিয়া…
    ওর স্বচ্ছ চিন্তা-চেতনার ধারা লেখার মধ্যে দিয়ে প্রকাশ করার কঠিন কাজটি, সত্যি প্রশংসণীয়!
    বাসু আচার্য্য জানে,সে পাঠক-কূল কে সে ঠিক কি বলতে চায়।
    যা অনেক লেখক এখনও জানেন না বলে আমরা,পাঠকরা ক্ষুব্ধ হই।
    বাঙ্গালনামায় বাসুর লেখার আমি একনিষ্ঠ ভক্ত-পাঠক
    সোহিনীর সাথে সুর মিলিয়ে তাই আমিও বলি,এই লেখার একটা প্রোসেইক সিক্যুয়েল চাই-ই চাই 🙂

  17. brishti said

    এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্যে অত্যন্ত দুঃখিত !

  18. Arjun Banerjee said

    Darun lekha. lekhok janen ki bhabe communicate korte hobe. indeed a good one! vasha bhsihon bhabe sparsha kore.

    lekhate jodio ajijul haqer influence spashta. 😀

    basu, likhe ja. 😀

  19. adaap said

    সাড়ে বারো কোটির ওয়েব সাইটে এই প্রথম দেখলাম প্রায় উপেক্ষিত ভুলতে বসা ‘তুষার রায়’ কে নিয়ে লেখা
    শেষ নৌকা বাংলা সাহিত্যে নিসন্দেহে এক milestone.যত দূর মনে পরে সন্দীপন বাবু বেশ কযেক বছর আগে শারদীয়া আজকাল একটি লেখা কে ঘিরে ওনার কথা অনেক বলেছিলেন|
    কলকাতার জনবহুল রাস্তাতে ‘মৃত্যু মৃত্যু খেলা ‘….. আসলে উনি এসেছিলেন নিজেকে জালিয়ে দিতে . শেষ নৌকার শুরু তেই বলছেন “আমরা মুখে কেরোসিন নিয়ে আগুন জালানোর ভোজবাজির খেলা টা ভাষা দিয়ে দেখাই কত কেরোসিন যে মুখে চলে যায় তার খবর কে রাখে ” অনেকটা এই রকম . হয়ত হুবুহু বর্ণনা দিতে পারলাম না .
    “এই পুলিশ কবি কে দেখে
    টুপি টা খুলিস ”
    আবার ” সুনীল-শক্তি – পয়সা লোটার নতুন ফন্দি ” উনিই পারতেন . “তিমির তলপেটে ঘুম ” এক অসামান্য সৃষ্টি .আমার মনে হয় উনি ছিলেন সৃষ্টি কর্তার এক অত্যহাসী আর ভাগ্যের কি নিদারুন পরিহাস … জীবনের প্রায় অন্তিম লগ্নে মুখদিয়ে রক্ত বমি হছে আর উনি লিখছেন
    “কৃষ্ণ চূড়া আর ফুল ঝরিও না আমি লাল কম্বল পেতে শুয়ে আছি”
    বাসু বাবু আপনাকে নমস্কার এই সুন্দর লেখাটির জন্য.গর্ব হয় এই ডামাডোলের বাজারে আজও আমরা আছি এবং বহাল তবিযোতে.

    বানান ভুলের অসংখ্য ত্রুটিসহ + অকারণ (এই ধেড়ে খোকাটির) বাতুলতা মার্জনা করিবেন.

    • adaap said

      “সুনীল শক্তি যুগল বন্দী
      পয়সা লোটার নতুন ফন্দি ” মার্জনা করবেন “যুগল বন্দী”বাদ পরে গেয়েছিল .

  20. sujit das said

    ব্যান্ডমাস্টার পুরো বইটা কি পাবো আপনার কাছে? লিঙ্কটা জানবেন? খুব উপকৃত হই।

  21. mrinal chatterjeee said

    tushar ekta agun……………

  22. Satyabrata Acharya said

    tui ki sei Basu! –confirmed holaam tusharer upor lekhaa dekhe. khub bhaalo—daarun, asaadharon! — kothay chhile bhaai eto din ?
    Satyabrata

  23. তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় said

    বিনয় মজুমদারের পরবর্তী বাংলা কবিতায় তুষার রায় খুবই উল্লেখযোগ্য কবি।কবিতা এবং গদ্য দুয়েতেই ছিল তাঁর নজর-কাড়া নিজস্বতা।তাঁর হারিয়ে যাওয়া রহস্য উপন্যাস কিংবদন্তির উপত্যকা অামি খুঁজে বের করি ১৯৯৬ সালে।প্রতিভাস থেকে এটি ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত হয়েছে।

Leave a comment