বা ঙা ল না মা

Posts Tagged ‘ফিরে দেখা’

বাঙালবৃত্তান্ত ঃ পর্ব দুই

Posted by bangalnama on December 31, 2009


(প্রথম পর্বের পর)


হাজরাদি’ পরগণা


একজন নামজাদা গল্পবলিয়ে অনেক অনুরোধ-উপরোধে ঢঁেকিগিলে গলাখাঁকারি দিলেন। আড্ডার সবাই নড়েচড়ে বসলো।
– “আমার একটা শর্ত আছে; এখানে হাজরাদি’ পরগণার কেউ হাজির থাকলে বলে ফেলুন। তাহলে আমি আর মুখ খুলছিনে।”
সবাই চুপচাপ। বক্তা সবার মুখে একবার চোখ বুলিয়ে নিয়ে গল্প শুরু করলেন।
– “এক যে ছিল নদী, আর তার পাড়ে ছিল এক গাছ। তার পাতার এমনি গুণ যে তা’ জলে পড়লে হয় কুমির, আর ডাঙায় পড়লে বাঘ।”
– “আচ্ছা, যদি পাতাটা অর্ধেক জলে পড়ে আর অর্ধেক ডাঙায়! তা’হইলে কি দশা হইব? খুইল্যা ক’ন মশয়!”
সবার অবাক করা চোখ এখন নতুন বক্তার দিকে।
– “এই যে, সত্যি কথাটা আগেভাগে কেন স্বীকার করলেন না! বলেছিলুম না হাজরাদি’ পরগণার লোকের সামনে মুখ খুলব না!”


এই ‘কিসসা’টি শুনিয়ে আমার বাবা ফোড়ন কাটলেন,- “বুঝলে তো, এই হল তোমাদের হাজরাদি’ পরগণার লোক। এমন কুতর্ক! ভূ-ভারতে জোড়া পাওয়া ভার। যেমন তোমাদের নীরদ চৌধুরিমশায়।”
পিতৃদেব নীরদ চৌধুরিমশায়ের ইতিহাসবোধ ও মেঠো রসিকতা দু’টোই অপছন্দ করতেন। সেদিন প্রসঙ্গ ছিল নীরদবাবুর “দেশ” পত্রিকায় ‘হিন্দুর মেয়ের মুসলমানি পোশাক’ নামে সদ্যপ্রকাশিত প্রবন্ধটি।
– “কিন্তু ওনার বাড়ি তো যদ্দুর জানি আজকের বাংলাদেশের মৈমনসিং জেলার কিশোরগঞ্জ মহকুমায়।” আমি ফুট কাটি।
– “তোমাদের নিয়ে এইতো মুশকিল। লেখাপড়াটা ভাল করে করলে না। পড়েছ শুধু ‘কম্যুনিস্ট ম্যানিফেস্টো’, তা’ও সবটা নয়, মেরেকেটে হর্মন বা অস্ট্রিয়ান সংস্করণের ভূমিকাটুকু। তবু তর্ক করা চাই।- শোন, শের শাহ সুরি খাজনা আদায়ের সুবিধের জন্যে গোটা দেশটাকে অনেকগুলি পরগণায় ভাগ করেছিলেন। কিশোরগঞ্জ মহকুমার প্রায় সবটাই হাজরাদি’ পরগণার মধ্যে পড়ে।”

বাকি অংশটি এখানে পডু়ন…

Posted in ছোটবেলা, ফিরে দেখা, বাঙাল, বাম আন্দোলন, ময়মনসিংহ, রাজনীতি, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, স্মৃতিচারণা | Tagged: , | 1 Comment »

সেই সময়ের গল্প – পর্ব এক

Posted by bangalnama on December 31, 2009


সাবেক পুর্ব পাকিস্তান থেকে প্রথম দফায় যাঁরা ভারতে এসেছিলেন আমি তাঁদের দলের। সেই ১৯৫১ সালের আগস্ট (শ্রাবণ) মাসে বছর দশেক বয়সে পুর্ববঙ্গ ছেড়েছি। সেই বয়সের স্মৃতি প্রায় ষাট বছর পর মনে থাকাটা মুশকিলই বটে। তবে ভুলে যাওয়াও হয়ে ওঠেনি।


পাবনা শহর থেকে আমাদের পরিবারের সবাই ১৯৪৮এ কলকাতা চলে এলেও আমার আসা হয় নি। কারণ ঐ সময় আমি মামার বাড়ি ছিলাম। তাই পরে আসা।


ছোট বয়স থেকে নিরিবিলিতে থাকতে অভ্যস্ত আমি প্রথমেই ঘাবড়ে গেছিলাম রেলগাড়ীতে চড়ার জন্য উদগ্রীব মানুষের সংখ্যা দেখে। প্ল্যাটফর্মবিহীন একটা হল্ট স্টেশনে গিসগিস করছে লোক । দূর থেকে ইঞ্জিনের আলো দেখামাত্র সবাই যে যারমত প্রস্তুতি নিতে শুরু করাতে আমার মনে যে কি চাঞ্চল্য জেগেছিল সেটা আজও মনে আছে। বেশ মনে আছে আমাকে জানালা দিয়ে কামরায় ঢুকিয়েছিলেন বড়মামা আর কেউ একজন টেনে নিয়েছিল। স্টেশনের নাম ছিল সম্ভবত ভাঙ্গুরা।

বাকি অংশটি এখানে পডু়ন…

Posted in উদ্বাস্তু ও জবরদখলকারী, ছোটবেলা, দেশভাগ, পরিযাণ, পাবনা, ফিরে দেখা, বাঙাল, স্মৃতিচারণা | Tagged: , , , , , , , , | 1 Comment »

জীবন তরীর সফর – পর্ব এক

Posted by bangalnama on December 31, 2009


প্রাক-কথন ঃ এই লেখাটা সম্পর্কে কয়েকটা কথা বলার আছে। এটা একটা জীবনকথা হয়েও ঠিক জীবনকথা নয়। এটা একজন অত্যন্ত সাধারণ মানুষের বড় হয়ে ওঠার গল্প, তাঁর বাল্যকাল থেকে বার্ধক্যে পৌঁছনোর কাহিনী। তাঁর চোখ দিয়ে দেশভাগ আর তার প্রভাবকে ফিরে দেখা, আর সময়ের দ্রুত বদলে যাওয়া-কে মাপার চেষ্টা করা। এই লেখার রসদ কিছুটা তাঁর নিজের মুখ থেকে শোনা, কিছুটা আশপাশের লোকের মুখ থেকে, আর বাকিটা বিভিন্ন সময়ে ওঁর কথাবার্তা থেকে আন্দাজ করে নেওয়া। সেই জন্যই এটা গল্প, জীবনী নয়। ওঁর জীবনের ইতিবৃত্তের এই Jigsaw Puzzle টা কতটা সমাধান করতে পেরেছি, মানে ছবিটা কতটা স্পষ্ট আর উপভোগ্য হয়েছে, সেটা পাঠক বিচার করবেন। শুধু একটা কথা – লেখাটার যা কিছু খামতি তার দায় আমি মাথা পেতে নিলাম; আর এটার মধ্যে উপাদেয় কিছু থেকে থাকলে তা বাঙালনামার সম্পাদকদের কৃতিত্ব। ওরা আমাকে দিয়ে লিখিয়ে না নিলে এই লেখার জন্ম সম্ভব ছিলনা।

***

আস্তে আস্তে আকাশটা পরিষ্কার হচ্ছে। তারাগুলো টুপ টুপ করে ডুবে যাচ্ছে। উঁচু উঁচু গাছের মাথাগুলো একটু একটু করে দেখা যাচ্ছে। এখনো সূর্য উঠতে দেরি আছে। শীতের সকাল হালকা একটা কুয়াশার চাদর গায়ে জড়িয়ে রেখেছে। পুকুরের জলের ওপরে পাতলা দুধের সরের মত কুয়াশা ভাসছে। হঠাৎ এই নিস্তব্ধ পরিবেশের মধ্যে একটা কাক ডেকে উঠল, তারপরে এক এক করে আরো কয়েকটা…। এক মুহূর্তে যেন আলোও অনেকটা বেড়ে গেল। আরেকটা দিন শুরু হয়ে গেল।


ঠিক এই সময়ে শ্যামের ঘুম ভাঙল। রোজই এই সময়েই ঘুম ভাঙে। কিছুটা অভ্যেসে, কিছুটা বাবা’র গম্ভীর স্বরে গীতা’র শ্লোক আবৃত্তির আওয়াজে। বাবা রাখালচন্দ্র স্থানীয় সাব-ডিভিশনাল স্কুলের সেকেন্ড মাস্টার, একডাকে এই মাদারিপুর শহরের সকলে চেনে, ইংরেজি আর সংস্কৃত পড়ান। সম্পূর্ণ গীতা রাখালচন্দ্রের মুখস্থ। প্রত্যেকদিন সকালে উঠে তারই খানিকটা করে আবৃত্তি করেন তিনি, বালক শ্যাম ঘুম ভেঙে বিছানায় শুয়ে শুয়ে শোনে আর মাথার কাছের খোলা জানলাটা দিয়ে আকাশটাকে আস্তে আস্তে পরিষ্কার হতে দেখে লেপের ভেতর থেকে মাথা বের করে। বাবার আবৃত্তি শেষ হয়, শ্যামও লেপের মধ্যে থেকে বেরিয়ে চাদরটা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে নেয়। বাবা হাসিমুখে জিজ্ঞেস করেন, “কি রে খোকা! এত তাড়াতাড়ি উঠে পড়লি?” শ্যাম কোনো উত্তর না দিয়ে হাসিমুখে একটা দাঁতন নিয়ে ছুটে যায় পুকুরপাড়ে। পুকুরের জলের দিকে তাকিয়ে থাকে, যেখানে হালকা কুয়াশা ভাসছে। হঠাৎ কোথা থেকে একটা মাছরাঙা জলে ঝাঁপ দেয় আর মুহূর্তে টুকরো টুকরো হয়ে যায় জলের শান্ত সমাহিত রূপ। শ্যাম চোখ খুলে তাকায় দূরের মাঠের দিকে। দিগন্তে সু্য্যিঠাকুর উঠি উঠি করছেন, রোজকার আবির খেলা শুরু হয়ে গেছে। শ্যাম চাদরটাকে ভালো করে গায়ে জড়িয়ে নিয়ে তাকিয়ে থাকে ওইদিকে। রোজের দেখা দৃশ্যেরই পুনরাবৃত্তি দেখবার জন্যে মনে মনে তৈরি হয়।

বাকি অংশটি এখানে পডু়ন…

Posted in ছোটবেলা, দেশভাগ, ফিরে দেখা, স্মৃতিচারণা, Stories | Tagged: , , | 1 Comment »

বাঙালবৃত্তান্ত ঃ পর্ব এক

Posted by bangalnama on August 31, 2009


স্মৃতির কোলাজ – বড়পিসিমা

১৯২৫ সাল। ময়মনসিংহ জেলার মফঃস্বল শহর বাজিতপুরের উকিলবাবু সতীশচন্দ্র রায় মহাশয়ের জ্যেষ্ঠাকন্যা শিশিরকণার অথবা বকুলের বিবাহ ঐ জেলারই যশোদলনিবাসী সুরেশচন্দ্র পালের সঙ্গে দিলেন। পাত্র ভারতসরকারের অফিসের বাবু। অফিস্ শীতে দিল্লীতে, গ্রীষ্মে শিমলায়। বকুলের বয়স বারো, পাত্র চব্বিশ।

শৈলা গ্রামের ডঃ নীহার রঞ্জন রায় (পরবর্তীকালে প্রখ্যাত সমাজতাত্ত্বিক ও ভারতবিদ্যাবিদ ) বকুলের মাতুলসম্পর্কীয়। তিনি কলিকাতার ব্রাহ্মসমাজ ও রাবীন্দ্রিক প্রগতিবাদের প্রভাবে এই বাল্যবিবাহের বিরোধিতা করেন।

কিন্তু সতীশচন্দ্র অনঢ়। তাঁহার বিচারে পশ্চিমদেশে কর্মরত সরকারী চাকুরিয়া জামাতা অতি সুপাত্র। কারণ কিছুদিন পূর্বে তিনি স্বয়ং রাজধানী কলিকাতায় সেক্রেটারিয়েটে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু রাজধানী দিল্লীতে স্থানান্তরিত হওয়ায় এবং পিতার আপত্তির কারণে সরকারীকর্ম হইতে পদত্যাগ করেন এবং ক্ষুণ্ণমনে আঠারোবাড়িয়ার গ্রামের বাড়িতে ফিরিয়া আসেন। তৎপশ্চাৎ সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের ভার তেজস্বিনী মাতাঠাকুরাণীর করকমলে সমর্পণ করিয়া বাজিতপুর শহরে মহকুমা আদালতে ওকালতিতে মনোনিবেশ করেন। অতএব—-।।

বাকি অংশটি এখানে পডু়ন…

Posted in কলকাতা, ছোটবেলা, পূর্ব পাকিস্তান, ফিরে দেখা, বঙ্গভঙ্গ, বাঙাল, ময়মনসিংহ, স্মৃতিচারণা, ১৯৭০-এর কলকাতা | Tagged: , , , , , , | 3 Comments »

দাদুর গল্প

Posted by bangalnama on March 9, 2009



দাদু-নাতি সম্পর্কটা মনে হয় দুনিয়ার সেরা আদুরে সম্পর্ক। নাতনীরা দোষ নেবেন না যেন, পোলিটিক্যালি কারেক্ট হতে বলি, নাতি মানে পুং-স্ত্রী সকলেই। দুনিয়ায় এমন কে আছে যে কারুর না কারুর নাতি বা নাতনী নয়! কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ সকলের কপালে দাদুর আদর খাওয়া হয়ে ওঠে না। আমার ঠাকুর্দাদা মারা গিয়েছিলেন যখন আমার বছর খানেক বয়স। দাদু(মাতামহ) থাকতেন কলকাতায়, আর আমরা শিলিগুড়িতে। তাই, যদিও উনি আমাকে খুবই ভালবাসতেন, দেখা হত ন’মাসে ছ’মাসে একবার। এঁরা ছাড়াও, আমার সৌভাগ্য যে আমি আরেকজন দাদুর সান্নিধ্য পেয়েছিলাম।


তাঁর নাম গোপীমোহন রায়চৌধুরী। উনি আমার কিরকম দাদু হন তা আমি বহুদিন পর্যন্ত জানতাম না। ছোটবেলায় জানার খুব একটা ইচ্ছেও হয়নি, প্রয়োজনও ছিল না। মা একবার বলেছিলেন যে উনি বাবার খুড়ো হন। মা ও ডাকতেন তাঁকে কাকাবাবু বলেই। সুতরাং ব্যাপারটা মানিয়ে গেছিল।


আমরা যদিও পূর্ববঙ্গীয় ছিলাম, মা ও বাবা পড়াশোনা করেন কলকাতায়। তাই আমাদের ভাষায় পূর্ববঙ্গীয় ছাপ খুব একটা ছিল না। যদিও বাবা মাঝে মাঝে বন্ধুদের সাথে কথায় বাঙাল ভাষা ব্যবহার করতেন। আমি বলতাম শিলিগুড়ির একটা লোকাল ডায়ালেক্ট যেটা বাঙাল ভাষার গা-ঘেঁষা একটা উপভাষা বা ‘sub’ভাষা বলা চলে। কিন্তু দাদু বলতেন পাঁড় বাঙাল ভাষা, তাই দাদুর কথাবার্তা-গল্পসল্প সবই একটা অন্য মাত্রায় পৌঁছত। এখানে ছোট্ট করে দাদুর একটা বর্ণনা দিয়ে নিই। দাদু লম্বা-চওড়া লোক ছিলেন, যদিও এখন দাদুর ছবি দেখলে কেউ আর সেকথা বিশ্বাস করবে না। অবশ্য বয়সও তো অনেক হল। তাই সেটাই স্বাভাবিক, না? যতদূর মনে পড়ে, কোনোদিনও দাদুর মাথায় একটাও কালো চুল দেখিনি। দাদুর মাথাভরা সাদা চুল ছিল, টাক ছিল না। ভারী বাহারে পরিপাটি করে মাথায় তেল মেখে সোনার বোতাম লাগানো পরিষ্কার সিল্কের পাঞ্জাবি আর ধুতি পরে দাদু বেরোতেন – সকালে একবার আর সন্ধ্যাবেলায় একবার। রিকশায় ওঠা পছন্দ করতেন না তেমন। রুপো-বাঁধানো লাঠি হাতে টানটান হেঁটে যাওয়া দাদুর শরীরটা একটা চেনা চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছিল শিলিগুড়িতে।


দাদুর বিছানায় সারা বছর কম্বল পাতা থাকত। সেযুগে শিলিগুড়িতে বিশেষ গরম পড়ত না। দাদুর বিছানায় দাদুর কোলের কাছে আধশোয়া হয়ে বহু গল্প শুনেছি। সে গল্পে রাজপুত্র-রাজকন্যা থাকত না। আমার দাদু বানিয়ে গল্প বলতেন না। বলতেন তাঁর জীবনের নানা গল্প। আজ সেই গল্পের কিছু স্মৃতিচারণা করব।

বাকি অংশটি এখানে পডু়ন…

Posted in ছোটবেলা, ফিরে দেখা, বাঙাল, সংগীত, স্মৃতিচারণা | Tagged: , , , , , , , , , , , , , , , , , , , | 6 Comments »

The Not-so-well-known Stories

Posted by bangalnama on September 23, 2008


Around the 1920s, the push for women’s education had begun in a big way in East Bengal. At the forefront of this movement was Barisal, in the south of the country. The late 1880s had already seen a blazing star with Barisal roots, in the form of Dr. Kadambini Ganguly, the first woman physician in South Asia to be trained in European medicine. Inspired by the likes of her, women surged into the field of the educated.


However, it was not possible for every girl and woman, in that era, to step outside the home, in order to study. So the problem was resolved by the ingenuity of those remarkable women, by having women teachers, who were willing and able, to come into antahpur – the very heart of their homes – to teach.

Read the rest of this entry »

Posted in ছোটবেলা, ফিরে দেখা, বরিশাল, স্মৃতিচারণা, Thespian, Women's Education | Tagged: , , , , , , | 7 Comments »