Archive for the ‘কলকাতা’ Category
Posted by bangalnama on December 22, 2010
– লিখেছেন সরজিৎ মজুমদার
“দিদি, এক বাটি আটা দিতে পারেন? কাইল সক্কালে গম ভাঙ্গাইয়া আনলে ফিরত দিয়া দিমু।“ পাশের বাড়ির মাসিমার কাছে আটা ধার নিয়ে এক রাত্রির খাওয়া। মাসিমাও তাঁর প্রয়োজনে কোন জিনিস ধার নিয়ে কাজ চালাতেন। এই দেওয়া নেওয়া চলত ১৯৪৭-এর পর পূর্ব পাকিস্তান থেকে আগত সহায় সম্বলহীন উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দাদের মধ্যে। এরাই বাঙ্গাল। সবারই অবস্থা সমান। সকলেরই জবর দখল করা জমিতে বসবাস। তাই নাম উপনিবেশ বা কলোনি। প্রতিবেশীর কাছে এই ধরণের গৃহস্থালী প্রয়োজনীয় বস্তু ধার নেওয়ার চল ছিল পশ্চিম পাকিস্থান থেকে উচ্ছিন্ন পাঞ্জাবী শরণার্থী পরিবারদের মধ্যেও। হিন্দি সিনেমায় ছিন্নমূল পাঞ্জাবীদের এই ধরণের আটা, চিনি ধার করা ব্যঙ্গাত্মক চরিত্রে দেখানো হয় অপাঞ্জাবীদের মনোরঞ্জনের জন্য। এর পিছনে যে একদল মানুষের সমূলে উচ্ছেদের, জাতি-দাঙ্গার করুণ কাহিনী আছে তা কেউ জানাল না, জানল না। দেশছাড়াদের যন্ত্রণা কেই বা তেমন করে বোঝে? প্রখর বুদ্ধি বা অনুভবি মন থাকলেই এই যন্ত্রণা বোঝা যাবে না। পরের প্রজন্ম, আমাদেরই ছেলেমেয়েরা, আমাদের অতীতের ভয়াবহ সামাজিক সংঘাত, নতুন দেশে বাস, নতুন পরিবেশ, ভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে দারিদ্র্যের সঙ্গে সংগ্রামের কষ্ট বোঝে না। দূরের মানুষ বুঝবে সে আশা কোথায়?
১৯৪৬-এর নোয়াখালির দাঙ্গা পরবর্তী সময়ে অনেক মানুষ বিষয় সম্পত্তি বিক্রি করে পূর্ব পাকিস্তানের পাট চুকিয়ে কলকাতা ও অন্যান্য জেলায় নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেছিল। যারা সেখানেই পড়েছিল ১৯৪৭-এ নেহরু-জিন্নার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দেশ ভাগাভাগি তাদের আচমকা ধাক্কা দিল। শুরু হল অনিশ্চয়তা এবং আবার দাঙ্গার আশঙ্কা। পশ্চিমবঙ্গে স্থিতু মানুষরা হয়ত ১৯৪৭-এর ১৫ই অগাস্ট স্বাধীনতার স্বাদ উপভোগ করেছে। যারা জাতি-দাঙ্গার রক্তরূপ দেখেছে তাদের পূর্ববাংলার ত্রস্ত দিনগুলোতে স্বাধীনতার স্বাদ নেওয়া হয় নি। ১৯৪৯-এ আবার দাঙ্গা শুরু। এবার দাঙ্গা লাগল খুলনা, ঢাকা, রাজশাহী, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ জেলাগুলোতে। ভীতি-আচ্ছন্ন মানুষ দেশভাগের পর যেদিকে “আমাদের লোক” সেদিকে যাওয়াই নিরাপদ মনে করে হাজারে হাজারে শরণার্থী হয়ে চলেছিল পশ্চিমবঙ্গ অভিমুখে। কেউ এসে উঠল আত্মীয়ের বাড়ি, কেউ শরণার্থী ক্যাম্পে, কেউ জায়গা না পেয়ে শিয়ালদহ স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম-এ। অনেকে পশ্চিম দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি, কুচবিহারের দিকেও গিয়েছিল। বেশ কিছু উদ্বাস্তুকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল আন্দামান ও দন্ডকারণ্যে। সেই ১৯৪৭-এ শরণার্থীদের ভারতে আসার স্রোত কিন্তু আজও বন্ধ হয় নি, যদিও সরকার ইদানীং কালে আসা মানুষদের উদ্বাস্তু বলে স্বীকার করে না।
বাকি অংশটি এখানে পডু়ন…
Posted in উদ্বাস্তু ও জবরদখলকারী, কলকাতা, কলোনী, ক্যাম্প, ছোটবেলা, দেশভাগ, পরিযাণ, পূর্ব পাকিস্তান, ফিরে দেখা, স্মৃতিচারণা | 12 Comments »
Posted by bangalnama on December 22, 2010
– লিখেছেন রবি-দা
(প্রথম পর্বের পর)
৩
উদ্বাস্তু স্রোতের ভেসে আসা মিছিলে সমাজের সব শ্রেণীর মানুষজন ছিলেন – শ্রমজীবী থেকে বুদ্ধিজীবী, চাষী, কামার, কুমোর, ধোপা, নাপিত, পুরোহিত, শিক্ষক, অধ্যাপক, উকিল, ডাক্তার, মোক্তার – সবাই। জীবিকার সন্ধানে তাই প্রথমে যে যার রাস্থায় হাঁটার চেষ্টা করলেন, কিন্তু কেউ কেউ ছোটখাটো ঠিকানায় পৌঁছে গেলেও সকলের মনস্কামনা পূরণ হবার ছিল না। শ্রমজীবীদের অধিকাংশও ধীরে ধীরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়লেন আরো বিস্তৃত পরিসরে, একে অপরকে খোঁজ দিতে লাগলেন কাজের। পূর্ববঙ্গের সীমানা পেরিয়ে কলকাতা পর্যন্ত অঞ্চলের রূপরেখা পাল্টাতে লাগল হঠাৎ করে। খেদিয়ে দেওয়া ওই বাঙালদের মধ্যে যেভাবেই হোক কিছু একটা করবার দুর্নিবার ইচ্ছা মাথা চাড়া দিয়ে উঠল, তাদের কাছে কোনো বাধাই আর বাধা থাকল না, থাকল না লজ্জা-সঙ্কোচের বালাই। মাস্টারের ছেলে বাড়ি বাড়ি পেন্সিল বিক্রি করতে বেরোলেন, কেই বা চেনে তাঁকে ওই বিশাল জন-অরণ্যে, তাই না? গামছা, ধূপকাঠি, অ্যালুমিন্যিয়ামের বাসনপত্র, এইসব নিয়ে সরাসরি খদ্দেরের কাছে পৌঁছে যাবার এই পুরানো প্রচেষ্টা নতুন করে জোরদার হয়ে উঠল বাঁচার তাগিদে। “মনে রেখো, তোমার বাপ-ঠাকুর্দারা করেনি এসব!” – এককালের এই বহু-উচ্চারিত সতর্কবাণী কালের গভীরে চাপা পড়ে গেল, প্রচলিত সব ধ্যান-ধারণাকে তাচ্ছিল্য করে বাঙাল পৌঁছে গেল নদীয়া, মূর্শিদাবাদ, চব্বিশ পরগনার গ্রামে-গঞ্জে। চাষবাসের কাজে জোয়ার এল, জমির চেহারা পাল্টাতে লাগল, পতিত জমি, দাঙ্গা জমি, খাল-বিল সবকিছু সবুজ হতে লাগল – কোনো অদৃশ্য জাদুবলে নয়, প্রচণ্ড জেদী এবং বাঁচতে চাওয়া মানুষদের মেহনতী ঘামে। মানকচু, চালতা, নলতে শাক, কচুর লতি, কচুর শাক, শালুক ফুল/ডাঁটা(যাকে কলকাতার ঘটিরা তখন ‘কয়েল’ বলে ঠাট্টা করতেন) – এসব বাজারে এল পণ্য হয়ে, হাসাহাসি শুরু হয়ে গেল ফুটপাথের তরকারি বাজারে। কিন্তু চাহিদা ও যোগান দুটোই বেড়ে গেল ওইসব হাস্যকর শাক-সব্জির, কারণ এখানে মাঠে-ঘাটে-গাছে তারা বেওয়ারিশ হয়ে পড়ে থাকত অবহেলায়, তাদের কোনো মালিকানা ছিল না – তাই বেশ সস্তায় বিক্রি হত বলে ভুখা বাঙাল খরিদ্দারও খুব খুশি মনে ঘরে আনতে লাগলেন তাদের। এই কৃষিকাজে লিপ্ত মানুষদের আলাদা করে বসতি গড়ে উঠতে লাগল গ্রামের পরিচিত সীমানার বাইরে পড়ে থাকা পরিত্যক্ত খাসজমিতে। ঢাকা ও টাঙ্গাইলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের তন্তুবায় গোষ্ঠীর লোকজন চলে গেলেন শান্তিপুর, ফুলিয়া-সহ নদীয়া ও মূর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের আনাচে-কানাচে। জলবায়ু ও পরিবেশগত কারণে সেখানে আগে থেকেই ওই সম্প্রদায়ের মানুষজন সুনামের সাথে কাজ করতেন, পূর্ববঙ্গের বস্ত্রশিল্পীদের সাথে সেই অঞ্চলের শিল্পীদের নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগও ছিল। প্রথম প্রথম ছিন্নমূল, কপর্দকহীন তাঁতশিল্পীরা মহাজনের কাছ থেকে বানী নিয়ে শাড়ি বুনতেন, পরে অনেকেই তাঁত বসিয়ে মাকু চালিয়ে বাড়িতে অন্যান্য জরুরি প্রাত্যহিকী বহাল রেখেও সবাই মিলে কাপড় বুনতে লাগলেন। বস্ত্রবাজারে, বিশেষ করে শাড়ির জগতে বাজিমাত করে দিল তাঁতের শাড়ি – ঢাকাই জামদানি, বালুচরী, নকশা পাড়, হাজার বুটি, বনেদীয়ানার শীর্ষে চলে এল ওপারের শিল্পীদের নিরন্তর সাধনা ও কারিগরী নৈপুণ্যে। লাল চওড়া পাড় সাদা খোলের শাড়ি বঙ্গনারীদের আধুনিকতার প্রতীক হয়ে উঠল, আটপৌরে মোটা সুতোর শাড়ির চাহিদাও ছিল আকাশচুম্বী, একটু খাটো হত সেসব শাড়ি কিন্তু দাম ছিল কম ও টেকসই ছিল খুব। একইসাথে শান্তিপুর ও কলকাতার মানিকতলায় হাট বসত ওইসব শাড়ির, হারানো মাটি খুঁজে পাওয়ার স্বাদ পেল ধীরে ধীরে বহু শ্রমজীবী উদ্বাস্তু সম্প্রদায়। তবে হইহই করে সাড়া ফেলে দিয়ে কলকাতার ফুটপাথে ক্রেতা-বিক্রেতার মিলন ঘটাল আরেকদল সর্বহারা। আগেই বলেছি, লাজলজ্জা-দ্বিধা-সঙ্কোচ সবকিছু খড়কুটোর মত ভেসে গেছিল তাদের বেঁচে থাকার লড়াইয়ের ধাবমান স্রোতে। ঘরে বসে পরিবারের সবাই মিলে বাজারের চাহিদামত বানাতে লাগলেন ডালের বড়ি, ঘি, ধূপকাঠি, খবরের কাগজের ঠোঙা, কুলের আচার, আরো কত কি! এলাকা এলাকার ফুটপাথের বাজারে সেসব সামগ্রী নিয়ে পৌঁছে যেত বাপ-ব্যাটা, সবাই মিলে। খদ্দের স্থায়ী হতে শুরু হলেই জিনিসের গুণগত মান নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার ইন্টার্যাকশন জমে উঠল, বিক্রেতা উৎসাহী হয়ে ক্রেতার চাহিদা ও পরামর্শকে বাস্তবায়িত করতে সচেষ্ট হলেন। কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই অল্প পুঁজির খুদ্র আকারের কুটিরশিল্পের এক নতুন দিগন্তের সূচনা হল। পাঠক অবাক হবেন জেনে যে পরবর্তীকালে এদের তৈরি বেশ কিছু সামগ্রী ব্র্যান্ডেড হয়ে কলকাতার বাজার দখল করেছে শুধু গুণগত মানের সুনামের নিরিখে। অপরদিকে, দূর-দুরান্তে যাদের পুঁজিপাটা একেবারেই কিছু ছিল না, তারাও হাল না ছেড়ে খেজুরের রস, তালের শাঁস, মাঠেঘাটে ছড়িয়ে থাকা সুষনি শাক, হিঞ্চে শাক, ফুল-বেলপাতা, কলাপাতা, কচুপাতা, শামুক, গুগলি – এসব বয়ে এনে বসে গেলেন বাজারে। শুধু বিক্রেতার ভূমিকাতেই নয়, আবার ক্রেতা হয়ে বাজার দখলে নামলেন আরেকদল পরিশ্রমী বাঙালের দল। বড়সড় চট অথবা লাল শালুর বস্তায় দাঁড়িপাল্লা, বাটখারা বয়ে নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ক্রয়-অভিযান চালালেন পুরনো খবরের কাগজ, বইখাতা, শিশি-বোতল, টিন-লোহা-অ্যালুমিনিয়াম, শাড়ি-জামাকাপড়, মায়ে প্লাস্টিকের চিরুনি কৌটো পর্যন্ত নিয়ে। PL ক্যাম্পে ভীড় কমতে লাগল, রাজ্যের অর্থনীতিতে রিফিউজিদের এই অগ্রগতি দেখে তখনকার কিছু মানুষ মনে হয় শঙ্কিত হয়ে উঠলেন। এটা স্বাভাবিক ছিল, কারণ তাঁদেরও সন্তান-সন্ততির ভবিষ্যতের চিন্তা ছিল; স্বাভাবিকভাবেই আওয়াজ উঠল “হকার উচ্ছেদ”-এর। রাজনৈতিক বা যে কোনো কারণেই হোক, কম্যুনিস্টরা খেটে খাওয়া মানুষদের সমর্থনে এগিয়ে এলেন, কংগ্রেসও অসহায় হয়ে চুপ করে রইল রাজনৈতিক জমি হারিয়ে যাবার ভয়ে।
বাকি অংশটি এখানে পডু়ন…
Posted in উদ্বাস্তু ও জবরদখলকারী, কলকাতা, কলোনী, ক্যাম্প, ছোটবেলা, দেশভাগ, পূর্ব পাকিস্তান, ফিরে দেখা, বাঙাল, স্মৃতিচারণা | 9 Comments »
Posted by bangalnama on September 13, 2010
– লিখেছেন রঞ্জন রায়
(দ্বিতীয় পর্বের পর)
সতীনের নাম আরশোলা
সুষমা মারা গেছেন। খবরটা পেয়ে উদাস হয়ে সিগ্রেট ধরাতেই গিন্নি বল্লেন- কি, হয়েছেটা কি?
আমি বল্লাম যে নিজের সময়ের আগে জন্মানো একজন এই দুনিয়া থেকে পাততাড়ি গোটালেন। তারপর এই সুষমাটি কে? আমার সঙ্গে কিসের সম্পর্ক? – এইসব বাঁধাগতের হাবিজাবি কথা উঠতেই আমি ঠাকুমার একটি ছড়া ঝাড়লাম, — উনি আমার কি লাগেন? ঠাকুরবাড়ির গাই লাগেন।
তারপর বল্লাম যে উনি আমার কলকাতার পাতিপুকুর অঞ্চলের সেজপিসেমশায়ের সৎবোন, আবার ছত্তিশগড়ের রায়পুর শহরের দূর্গা কলেজের রেজিস্ট্রার কারকুনদা’র সৎমা। গিন্নি বিরক্ত হয়ে বল্লেন- পারো বটে খুঁজে খুঁজে আত্মীয় পাতাতে।
– বাজে বোকো না। বালকবয়সে আমি পাতিপুকুর বাড়ি গিয়ে ওনার জন্মসূত্রে অস্বাভাবিক মেয়ে নিশার ভাইফোঁটা নিয়েছি। এখন চিনিনা বললে চলবে? ধম্মে সইবে? তার চেয়ে লিপটনের চা বানাও আর সুষমার গপ্পো শোনো।
বাকি অংশটি এখানে পডু়ন…
Posted in কলকাতা, ফিরে দেখা, বাঙাল, ময়মনসিংহ, সাহিত্য | Leave a Comment »
Posted by bangalnama on December 31, 2009
“তিনটে এক্সট্রা হবে, দাদা?”
তখনও অর্কুট আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেনি জীবনকে। স্কুল-কলেজের কয়েকজন ছাড়া খুব একটা বন্ধুত্বও নেই বিশেষ কারুর সঙ্গে। ফলে শহরে কি কি ঘটছে বা ঘটতে চলেছে, চটজলদি খবরও পাই না। এমনি কোনো এক শুক্রবার কলেজে গিয়ে খবরটা পেয়েই সোজা কলামন্দির।
সেই প্রথম, একা। হলের সামনে ইতিউতি জটলা, সবাই সব্বাইকে চেনে বোধহয়। বড় একা লেগেছিল। আঁধার তখনও নামেনি যদিও। সাড়ে ছ’টা থেকে অনুষ্ঠান হলেও চলে এসেছি সওয়া পাঁচটা নাগাদ। টিকিট নেই সঙ্গে, অথচ কাউন্টারেও কেউ নেই। কি যে করা উচিত সেটাই বুঝতে পারছি না। একা কোণে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছিলেন কুর্তা-পরা এক ভদ্রলোক, সাহস করে তাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম-
“আচ্ছা, টিকিট কোথায় পাওয়া যাবে?”
বাকি অংশটি এখানে পডু়ন…
Posted in কবিতা, কলকাতা, সংগীত, সংস্কৃতি, কৃষ্টি | Tagged: concert, Kabir Suman, Suman Chattopadhyay, Tomake Chai | 12 Comments »
Posted by bangalnama on December 31, 2009
কে না জানে বাঙালের অস্তিত্বের একটা বলিষ্ঠ উচ্চারণ ইস্টবেঙ্গল ফুটবল ক্লাব। এই স্বরটিকে সম্মান জানিয়ে বাঙালনামা শুরু করলো ইস্টবেঙ্গল-সিরিজ। অতীত ও বর্তমানের ইস্টবেঙ্গল মহারথীদের নিয়মিত সাক্ষাৎকার প্রকাশের পরিকল্পনা থাকলো। এই সংখ্যায় রাখা হলো বাংলা ফুটবলের স্বর্ণোজ্জ্বল ষাটের দশকের বিখ্যাত ফুটবলার সুকুমার সমাজপতির সাক্ষাৎকারের প্রথম ভাগটি। বাঙালনামার পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অনির্বাণ দাশগুপ্ত।
বাঙালনামা।। আপনার ছোটবেলার কিছু কথা বলুন-
সুকুমার সমাজপতি।। আমাদের আদি বাড়ি, অর্থাৎ আমার বাবার ছোটবেলা কেটেছে ফরিদপুরে। আমার নিজের জন্ম মামাবাড়িতে, পাবনা জেলার রতনগঞ্জ গ্রামে। আমার বেড়ে ওঠা এরপর থেকে কলকাতাতেই, ছোটবেলায় সাউথ সাবার্বান ইস্কুলে ভর্তি হই। সেখান থেকে প্রথম বিভাগে ইন্টারমিডিয়েট উত্তীর্ণ হয়ে আশুতোষ কলেজে জিওলজি নিয়ে পড়াশোনা করেছি।
বাঙালনামা।। আপনার বাড়িতে কি খেলাধুলোর পরিবেশ ছিল? খেলার প্রতি আগ্রহ কি বাড়ির থেকেই পাওয়া?
সুকুমার সমাজপতি।। দ্যাখো, বাড়ির কথা বলতে গেলে বলতে হয়, সেদিক থেকে আমি ভীষণ ভাগ্যবান ছিলাম, খেলাধুলো এবং সংস্কৃতি-চর্চার দু’টো ধারাই আমাদের বাড়িতে সমান্তরালে বইতো। আমার বাবা, স্বর্গীয় কালিপদ সমাজপতি খুব ভালো আঁকতেন। এই যে দেওয়ালে অয়েল-পেইন্টিংগুলো দেখছো, এইগুলো ওঁর-ই আঁকা। তার সঙ্গেই উনি ফার্স্ট ডিভিশনে কালিঘাটের হয়ে ফুটবলও খেলতেন। আমার ঠাকুরদা, স্বর্গীয় নিবারণচন্দ্র সমাজপতি ছিলেন সেযুগের বিখ্যাত কীর্তন-গাইয়ে। কাকারাও খেলাধুলোয় উৎসাহী ছিলেন… তাই, খেলাধুলো নিয়ে উৎসাহ আমি বাড়ির সবার কাছ থেকেই পেয়েছি।
বাকি অংশটি এখানে পডু়ন…
Posted in ইস্টবেঙ্গল, কলকাতা, ফিরে দেখা, ফুটবল, বাঙাল, মোহনবাগান, সংগীত, সাক্ষাৎকার | Tagged: Aryans Club, ইস্টবেঙ্গল ক্লাব, পাবনা, ফরিদপুর, Balaidas Chatterjee, Bechu Datta Ray, BNR, Durand Cup, IFA Shield, Mohammedan Sporting Club, Mohun Bagan, Montu Bose, Rovers Cup, Sailen Manna, Santosh Trophy, Sukumar Samajpati, Young Bengal Club | 1 Comment »
Posted by bangalnama on December 31, 2009
‘প্রতিদ্বন্দ্বী’, ‘সীমাবদ্ধ’ এবং ‘জন অরণ্য’- সত্যজিৎ রায়ের ‘ক্যালকাটা ট্রিলজি’ সম্পর্কে লিখিত ও পঠিত বিশ্লেষণের সংখ্যা কোনোভাবেই কম নয়। পরিসরের স্বল্পতা এবং লেখকের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কথা বিবেচনা করেই বর্তমান রচনার শিরোনামটি ভাবা হয়েছে। নৈতিকতা (ethics) এবং মূল্যবোধের (morality) সঠিক সংজ্ঞা নিরুপণ করা আজও পুরোপুরি সম্ভব হয়ে ওঠেনি। কাজটা আরো কঠিন হয়ে যায় যখন প্রেক্ষাপট হিসাবে থাকে সাহিত্য বা সিনেমার মত মাধ্যম, সমকালীন শব্দকোষ অনুযায়ী যাদের ‘high art’ বলা যেতে পারে। অতি সরলীকরণ দোষে দুষ্ট হওয়ার ঝুঁকিটুকু নিয়েই বর্তমান প্রবন্ধে নৈতিকতা এবং মূল্যবোধকে দুটি সামান্য আলাদা আদর্শ হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। ফরাসি দার্শনিক ও নব্য ইতিহাসবাদের প্রবক্তা Michael Foucault-এর অনুকরণে বলা যেতে পারে – নৈতিকতা একপ্রকার সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং মূল্যবোধের দায়বদ্ধতা ব্যক্তিবিশেষের কাছে। এই আপাত-সরল উক্তির মধ্যে অবশ্য এক গভীর ব্যঞ্জনার আভাস পাওয়া যায়। বিশেষ করে ১৯৮২ সালের রণজিত গুহ’র ‘সাবঅল্টার্ণ স্টাডিজ’-এর প্রচারের ফলে আমরা জেনেছি সামাজিক মানুষের অবস্থান কোনো স্বয়ংক্রিয় ঘটনা নয় – তা নির্ভর করে ব্যক্তিবিশেষের আর্থসামাজিক অবস্থান, বড় হয়ে ওঠা, ভাষা আর নানাবিধ মানসিক আদান-প্রদানের উপর। যদিও সমাজবদ্ধ কোনো ব্যক্তিবিশেষই এই আবর্তের বাইরে নন, সত্যজিৎ রায় তাঁর ফিল্মগুলির মাধ্যমে এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে চেয়েছেন যাকে সেলফ-রিফ্লেক্সিভ বলা চলে। নিজের অবস্থানের অমোঘতাকে স্বীকার করেই সত্যজিৎ তাঁর চরিত্রগুলির মাধ্যমে সেই অমোঘতার কারণগুলি দেখাতে চান। বর্তমান প্রবন্ধের দ্বিতীয় ও শেষ পয়েন্টগুলিও এই সেলফ-রিফ্লেক্সিভিটির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সত্যজিতের ছবিতে ভিক্টোরিয়ান এবং আধুনিক মূল্যবোধের দ্বান্দ্বিক অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট, এবং সাধারণ বিনোদনের সীমানা ছাড়িয়ে ক্যালকাটা ট্রিলজি এভাবেই হয়ে ওঠে গুরুত্বপূর্ণ এক সামাজিক দলিল যা স্রষ্টা, চরিত্র এবং পাঠক – এই তিন গোষ্ঠিকে সচেতন করে দেয় তাদের অবস্থানগত সীমাবদ্ধতা এবং দ্বান্দ্বিকতা সম্পর্কে। বিভিন্ন চমকপ্রদ সিনেম্যাটিক প্রযুক্তির সাহায্যে ‘সীমাবদ্ধ,’ ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ এবং ‘জন অরণ্য’ আমাদের এই উপলব্ধির মুখেই দাঁড় করিয়ে দেয়।
বাকি অংশটি এখানে পডু়ন…
Posted in উত্তর-ঔপনিবেশিকতা, কলকাতা, বাঙাল, সিনেমা, সিনেমা-আলোচনা, Thespian | Tagged: সত্যজিত রায়, Calcutta Trilogy, Dulal Roy, Jana Aranya, morality. ethics, Pratidwandi, Ranajit Guha, Seemabaddha, Soumendu Roy | 3 Comments »
Posted by bangalnama on October 25, 2009
এই যেটা লিখছি, সেটা বেসিকালি আত্মজীবনীর অংশ গোছের কিছু, ছোটবেলা কাটানোর রাস্তায় দেখে চলা কিছু জিনিসকে মনে করার চেষ্টা করা আর সেইখান থেকে বাঙাল আইডেন্টিটির কোনও দিশা দ্যাখা যায় কিনা দেখবার চেষ্টা করা। জায়গাটি আমার বাড়ির ঠিক পাশেই, কলিকাতা বিমান বন্দরের অতীব সন্নিকটে বাঙাল অধ্যুষিত একটি পল্লী। পল্লী বলাটাই সমীচীন হলো কারণ সন ১৯৯৬ অবধি এই অঞ্চলগুলি গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন ছিলো, অনেকগুলি ইঁটের রাস্তা আর আদ্ধেক-বুজে আসা পুকুর-ডোবায় সম্পৃক্ত হয়ে। ওপার বাংলায় বরিশালের খলিসাকোটা নামে কোনও বর্ধিষ্ণু গ্রাম ছিলো, ৪৭-এর দেশভাগের আশেপাশের সময় ধরে সেখানকার সম্পন্ন হিন্দুরা গ্রাম তথা দেশ ছাড়তে শুরু করলেন, ছড়িয়ে পড়লেন শহর কলিকাতার চারধারে। আর পাঁচটা উদ্বাস্তু আন্দোলনের মতন করে জমি দখল করে এই খলিসাকোটা কলোনীর জন্ম হয় নি। সেই ছড়িয়ে পড়া মানুষগুলি এ পারে বিভিন্ন আলাদা আলাদা ঠাঁই জুটিয়ে নিয়েছিলেন, তারপর নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন বিভক্ত ভারতবর্ষে। এর পর শুরু হলো হারিয়ে ফেলা পরিচয় খুঁজে পাওয়ার পালা- এক গ্রামের লোকেরা নিজেদের খুঁজে পেতে শুরু করলেন আর তারপর নতুন একটা গ্রাম বানালেন ফেলে আসা গ্রামের নামে, সেইটিই এই খলিসাকোটা কলোনী। বিমানবন্দর আর বিরাটির মাঝখানে মুসলমান চাষীদের কাছ থেকে জমি কেনা হলো। একঘর দু’ঘর করে ওপারের গ্রামের লোকেরা এসে ঘর বানাতে থাকলেন ৬০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে। এঁদের অনেকেই ততদিনে মোটামুটি ভাবে একটা অর্থনৈতিক স্বাচ্ছল্য অর্জন করে ফেলেছেন, তাঁরা বাকি আত্মীয় ও গ্রামবাসীদের ডেকে আনলেন এই জায়গাটিতে। ক্রমশঃ ইস্কুল, খেলার মাঠ, লাইব্রেরী, বারোয়ারি পুকুর নিয়ে ভদ্রস্থ জনপদ গড়ে উঠলো।
বাকি অংশটি এখানে পডু়ন…
Posted in উদ্বাস্তু ও জবরদখলকারী, কলকাতা, কলোনী, ছোটবেলা, পরিচয়, পরিযাণ, ফিরে দেখা, বরিশাল, বাঙাল, সংস্কৃতি, কৃষ্টি | Tagged: উদ্বাস্তু, দেশভাগ, বরিশাল, Birati, Dumdum, Khalisakota, Khalisakota Colony, Khalisakota Pally, Rayani songs, Sultanpur | 15 Comments »
Posted by bangalnama on October 25, 2009
এই গল্পটা আমার নয়। অনেকগুলো শোনা ঘটনাকে একত্রিত করার চেষ্টা। হতে পারে সত্যি, হতে পারে মিথ্যে, স্থান কাল পাত্রের অল্প পরিবর্তনও করেছি বিশেষ কারণে, তবে একেবারে অলীক কল্পনা এ নয়।
১
অতীনের ঘুম ভাঙল বিটুর ডাকে। জানলা দিয়ে উঁকি মেরে দেখল বিটু সাইকেল চেপে অপেক্ষা করছে। নিমের দাঁতন হাতে নিয়ে অতীন নেমে এল রাস্তায়। অন্যদিনের থেকে বেশি চঞ্চল গলিটা। পাশ কাটিয়ে বেশ কয়েকজন দ্রুতপদে বেরিয়ে গেল।
“কি হয়েছে রে?” অতীন জিজ্ঞাসা করল।
বিটু গলা নামিয়ে বলল, “শুনছি দাঙ্গা লেগেছে, চল ব্যাপারটা একবার দেখে আসি”। অতীন দৌড়ে ভেতরে ঢুকে গেল, জামাটা গায়ে গলিয়ে বেরিয়ে এল। ভেতর থেকে বাবা গম্ভীর গলায় বলে উঠলেন, “অতীন, পাড়ায় থেকো, পাড়ার বাইরে যেও না”।
বাকি অংশটি এখানে পডু়ন…
Posted in কলকাতা, দেশভাগ, পূর্ব পাকিস্তান, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা | Tagged: 16th August 1946, 1946, Calcutta communal riots, Calcutta riots, Goaland, Gopal Patha, Jugal Ghosh, Mushigunj, Narayangunj, Outshahi, Suhrawardy | 9 Comments »
Posted by bangalnama on August 31, 2009
In 1966, the writers of the Basic Development Plan for the city described Calcutta as a ‘metropolis in crisis.’ It was a description given in despair probably keeping in mind the city’s chequered history of urbanization. This urbanization was externally imposed by the English to meet the needs of a colonial economy and de-linked from the developments in the rural areas.1 The decade of the forties was characterized by major movements in population that stretched the limits of the city and its civic amenities, particularly the great famine of 1943 which took a toll of 6 million lives and pushed hundreds of people to seek relief into the city and its suburbs. After the Partition, the refugee movement greatly influenced the urbanization of the city because their sheer numbers transformed villages or semi urban areas to towns. In Calcutta, 25% of the metropolis agglomeration were refugees and between 1941 and 1951, Calcutta’s overall population density jumped by 20% while in areas with a large refugee presence like Tollygunj, the density increased by almost 141% within that same period.2
Read the rest of this entry »
Posted in উদ্বাস্তু ও জবরদখলকারী, কলকাতা, কলোনী, ক্যাম্প, পরিচয়, পরিযাণ, পূর্ব পাকিস্তান, বঙ্গভঙ্গ, রাজনীতি | Tagged: Amrita Bazar Patrika, Arun Mitra, ঋত্বিক ঘটক, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, Benoy Ghosh, Bishnu Dey, Broto Chakraborty, Buddhadev Bose, Darshana, great famine of 1943, Jibanananda Das, Kolkatar Jishu, Manindra Roy, Naresh Guha, Nirendranath Chakraborty, partition of India, Premendra Mitra, refugees in Calcutta, Samar Sen, Sankho Ghosh, Sealdah Station, Udvastu | 4 Comments »
Posted by bangalnama on August 31, 2009
মাসিক ‘বেণু’ পত্রিকার একটি বিশেষ সংখ্যা নিয়ে বসেছিলেন সুভাষচন্দ্র। যে কেউ দেখলে অবাক হয়ে যেত। বই খোলা অবস্থায় কোলের ওপর রাখা – অবিরাম ধারায় জল ঝরছে তাঁর চোখ দিয়ে। মেজদা শরৎচন্দ্র এসেছিলেন একটা খবর দিতে। ভাইকে দেখে খুব চমকে গেলেন। আলতো করে হাত রাখলেন কাঁধে। নিজেকে সামলে সুভাষচন্দ্র তাকালেন দাদা’র দিকে। তাঁর সপ্রশ্ন দৃষ্টির উত্তরে বললেন, “এবারের ‘বেণু’ পড়েছ? দীনেশের লেখা কয়েকটা চিঠি প্রকাশিত হয়েছে। মাত্র কুড়ি বছর বয়সে এত পরিণত! এ তো চিঠি নয়, জ্বলন্ত জীবন-দর্শন!” কিছুক্ষণ দুজনেই চুপচাপ। পত্রিকার কয়েকটা পাতা উলটে একজায়গায় থামলেন সুভাষ। বললেন, “দীনেশ তার বউদিকে লিখেছে –
‘ভারতবাসী আমরা নাকি বড় ধর্মপ্রবণ। ধর্মের নামে ভক্তিতে আমাদের পণ্ডিতদের টিকি নাকি খাড়া হয়ে ওঠে। তবে আমাদের মরণের এত ভয় কেন? বলি ধর্ম কি আছে আমাদের দেশে? যে দেশে মানুষকে স্পর্শ করিলে মানুষের ধর্ম নষ্ট হয়, সে দেশের ধর্ম আজই গঙ্গার জলে বিসর্জন দেওয়া উচিত। সবার চাইতে বড় ধর্ম মানুষের বিবেক। সেই বিবেককে উপেক্ষা করিয়া আমরা ধর্মের নামে অধর্মের স্রোতে গা ভাসাইয়াছি……এতে কি ভগবান আমাদের জন্য বৈকুণ্ঠের দ্বার খুলিয়া রাখিবেন, না খোদা আমাদের বেহস্তে স্থান দেবেন? যে দেশকে ইহজন্মের মত ছাড়িয়া যাইতেছি, যাহার ধূলিকণাটুকু পর্যন্ত আমার কাছে পবিত্র, আজ বড় কষ্টে তাহার সম্বন্ধে এসব কথা লিখিতে হইল।’
বাকি অংশটি এখানে পডু়ন…
Posted in ইতিহাস, কলকাতা, জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, ঢাকা, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম | Tagged: Alinda Juddha, ঢাকা, Badal Gupta, BBD Bag, Bengal Volunteers, Bimal Dasgupta, Binoy Bose, Binoy-Badal-Dinesh, Colonel Simpson, Dalhousie Square, Dinesh Gupta, Medinipur, Munshigunj, Netaji Subhas Chandra Bose, Sarat Chandra Bose, Writer's Building | 1 Comment »
Posted by bangalnama on August 31, 2009
ভারতের জাতীয়তাবাদী ইতিহাসচর্চায় স্বাধীনতা একটি মহান ও পবিত্র বিজয়ফলক হিসাবে স্বীকৃত। জাতীয়তাবাদী আন্দোলন তার কাঙ্ক্ষিত পরিণতি লাভ করে স্বাধীনতা অর্জনের মধ্য দিয়ে। আরও সুস্পষ্ট রূপে বললে একটি জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। সেই স্বাধীনতা অর্জনের জন্য জাতীয়তাবাদী নেতৃবর্গ দেশভাগের সিদ্ধান্ত মেনে নিতেও পিছপা হননি। জাতীয়তাবাদী ইতিহাসের প্রকল্পে দেশভাগ ও তদ্জ্জনিত দুর্ভোগ ছিল নেহাৎই একটি মহান লক্ষ্য পূরণের জন্য কিছু মানুষের সামান্য আত্মত্যাগ। স্বাভাবিকভাবেই দেশভাগ বহু বছর ভারতের ইতিহাস চর্চায় উপেক্ষিত থেকে যায়। স্বাধীনতা উদ্যাপনের আনন্দোৎসবে ঢাকা পড়ে যায় দেশভাগের ফলে উৎখাত হওয়া মানুষের স্বজন ও স্বদেশ হারানোর হাহাকার। বিগত সহস্রাব্দের শেষ দশক থেকে দেশভাগের অভিজ্ঞতা নিয়ে এক নতুন ধরনের ইতিহাসচর্চা শুরু হয় মূলতঃ উত্তরভারতে, বিশেষ করে পাঞ্জাবে। এর রেশ এসে পড়ে পশ্চিমবঙ্গেও। সম্প্রতিকালে পশ্চিমবঙ্গে দেশভাগ নিয়ে ব্যাপক গবেষণা ও আলোচনা হচ্ছে। এর অনেকটাই স্মৃতিনির্ভর। এই ধরণের ইতিহাসচর্চার মধ্য দিয়ে স্মৃতি, সাহিত্য ও ইতিহাসের লক্ষ্মণরেখা ক্রমশঃ লুপ্ত হয়ে যাচ্ছে, যা বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয়। ইতিহাসের এই পদ্ধতিগত অভিযোজন নিয়ে যে বিতর্ক আছে তার মধ্যে না গিয়ে এই প্রবন্ধে তুলে ধরার চেষ্টা করব স্বাধীনতা ও দেশভাগের সমসায়িক বাংলার সৃষ্টিশীল মানুষরা কি ভাবে দেশভাগকে দেখেছিলেন। বাংলা কবিতা ও গানে তার প্রতিফলন কেমন হয়েছিল।
বাকি অংশটি এখানে পডু়ন…
Posted in ইতিহাস, উদ্বাস্তু ও জবরদখলকারী, কলকাতা, কলোনী, ক্যাম্প, জাতি, জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, পরিচয়, পরিযাণ, পূর্ব পাকিস্তান, বঙ্গভঙ্গ, বাংলাদেশ, রাজনীতি | Tagged: Achintya Kumar Sengupta, উদ্বাস্তু, দেশভাগ, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, Bishnu Dey, Boundary Commission, Chithi, Gaza Strip, Gyan Pandey, Hemanga Biswas, histriography of partition, Indian nationalist movement, Jasimuddin, Mangalacharan Chattopadhyay, Manindra Roy, Marya Manne, Nakuleswar Sarkar, nationalist historians of India, oral history of partition, Paul Muldoon, personal history of partition, Sankho Ghosh, Surendra Nath Sarkar, The Prose of Otherness, udbastu, Urvashi Butalia, W. H. Auden | 1 Comment »
Posted by bangalnama on August 31, 2009
স্মৃতির কোলাজ – বড়পিসিমা
১৯২৫ সাল। ময়মনসিংহ জেলার মফঃস্বল শহর বাজিতপুরের উকিলবাবু সতীশচন্দ্র রায় মহাশয়ের জ্যেষ্ঠাকন্যা শিশিরকণার অথবা বকুলের বিবাহ ঐ জেলারই যশোদলনিবাসী সুরেশচন্দ্র পালের সঙ্গে দিলেন। পাত্র ভারতসরকারের অফিসের বাবু। অফিস্ শীতে দিল্লীতে, গ্রীষ্মে শিমলায়। বকুলের বয়স বারো, পাত্র চব্বিশ।
শৈলা গ্রামের ডঃ নীহার রঞ্জন রায় (পরবর্তীকালে প্রখ্যাত সমাজতাত্ত্বিক ও ভারতবিদ্যাবিদ ) বকুলের মাতুলসম্পর্কীয়। তিনি কলিকাতার ব্রাহ্মসমাজ ও রাবীন্দ্রিক প্রগতিবাদের প্রভাবে এই বাল্যবিবাহের বিরোধিতা করেন।
কিন্তু সতীশচন্দ্র অনঢ়। তাঁহার বিচারে পশ্চিমদেশে কর্মরত সরকারী চাকুরিয়া জামাতা অতি সুপাত্র। কারণ কিছুদিন পূর্বে তিনি স্বয়ং রাজধানী কলিকাতায় সেক্রেটারিয়েটে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু রাজধানী দিল্লীতে স্থানান্তরিত হওয়ায় এবং পিতার আপত্তির কারণে সরকারীকর্ম হইতে পদত্যাগ করেন এবং ক্ষুণ্ণমনে আঠারোবাড়িয়ার গ্রামের বাড়িতে ফিরিয়া আসেন। তৎপশ্চাৎ সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের ভার তেজস্বিনী মাতাঠাকুরাণীর করকমলে সমর্পণ করিয়া বাজিতপুর শহরে মহকুমা আদালতে ওকালতিতে মনোনিবেশ করেন। অতএব—-।।
বাকি অংশটি এখানে পডু়ন…
Posted in কলকাতা, ছোটবেলা, পূর্ব পাকিস্তান, ফিরে দেখা, বঙ্গভঙ্গ, বাঙাল, ময়মনসিংহ, স্মৃতিচারণা, ১৯৭০-এর কলকাতা | Tagged: কলকাতা, ফিরে দেখা, ময়মনসিংহ, Bajitpur, Calcutta riots, Gokul Boral Street, Park Circus | 3 Comments »
Posted by bangalnama on August 31, 2009
(দ্বিতীয় কিস্তির পর)
সলতে পাকানো: জনৈক সাংবাদিক একবার গোদার-কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “মিঃ গোদার, আপনার কি মনে হয় না যে একটা ফিল্মের মাথা, তার পর ধড় এবং সব শেষে একটা ল্যাজ থাকা উচিত?”
অস্তিত্ববাদী দৃষ্টিভঙ্গী থেকে ডাইভ মেরে মাওবাদী দর্শনে পৌঁছনো চিত্রনির্মাতা জবাব দিয়েছিলেন, “নিশ্চয়ই, তবে আপনি যে ভাবে পর পর বললেন, ব্যাপারটা সেই ভাবে নাও ঘটতে পারে।”
কৈফিয়ৎ এবং আরো কিছু: সম্পাদকমন্ডলীর কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলাম যে কমরেড সরোজ দত্তর জীবনের বিবিধ ডাইমেনশনগুলো একে একে লিখে হাজির করব পাঠক কুলের কাছে। ছকটাও সাজিয়েছিলাম সেই ভাবে; কিন্তু বিপদের একশেষ! আমার ‘অপার্থিব’ ল্যাদ এবং ভ্রমণ-প্রীতি (খানিকটা বাধ্যতামূলক ভাবেই) সেই চিন্তায় জল ঢেলে দিল। অগত্যা সম্পাদিকাদ্বয়ের কাছে ‘পার্থিব’ ঝাড়! যাইহোক, মাথা নামক আকরিক-এ জমে থাকা জং ছাড়াতে বাধ্য হলাম বাঙালনামার ‘অগস্ট’ সংখ্যার কথা ভেবে। অগস্ট; সেই মাস যার ৪-৫ তারিখে গিন্নির ডোবারম্যানের বাহিনী শ্রমিক-কৃষকের আন্দোলনকে জলাতঙ্কগ্রস্ত করে তোলার জন্যে নির্মম ভাবে হত্যা করেছিল ‘মূর্তি ভাঙার কারিগর’কে।
বাকি অংশটি এখানে পডু়ন…
Posted in ইতিহাস, কলকাতা, নকশালবাড়ি আন্দোলন, বাম আন্দোলন, রাজনীতি, সত্তরের কলকাতা | Tagged: August 4th 1971, Charu Mazumdar, Debi Prasad Chattopadhyay, Debi Roy, Kanu Sanyal, Naxal Movement, Runu Guha Niyogi, Santosh Rana, Saroj Dutta | 1 Comment »
Posted by bangalnama on July 6, 2009
আমি বাঙাল এই রহস্যটা অনেকদিন জানতুম না। বাঙাল আবার কী? আমরা হলুম গিয়ে বাঙ্গালী। তাহলে এই যে মাইতি সার, চক্রবর্তী সাররা আছে, এরাও তো শুনি বাঙ্গালী? হ, বাঙ্গালীই তো। কিন্তু ত্যানারা হইলেন গিয়া কইলকাতার মানুষ। আসলে ত্যানাদের বাড়ি মেদিনীপুর ও বাঁকুড়া। সহজ বাঙ্গালীদের কাছে অন্য-বাঙ্গালী মানেই কইলকাতার।
বাঙাল ভাষাই বা কী বস্তু? আমরা কই ঢাকাইয়া। সিলেটি, ময়মনসিঙ্গা বুঝতেও বিশেষ বেগ পাই না। এই সব ভাষাই বাংলা ভাষা। অবশ্য বাংলা না এরম ভাষাও আছে। ধরুন অসমিয়া, যে ভাষায় রাস্তাঘাটে কথা বলা ভাল। আর আছে হিন্দী, যে ভাষায় অমিতাভ বচ্চন ডায়লগ মারে। সে ভারি বদখৎ ভাষা, স্রেফ অমিতাভের গুণে অমৃতসমান। আর হল গিয়ে আপনার ইংরিজি, সাহেবরা বলে। এর মইধ্যে দ্যাখেন বাঙাল পাওয়া গেল না। তাইলে ক্যালকেসিয়ানটা কী? ভট্টাচার্যসাররা বাড়িতে ক্যালকেসিয়ান কয়। আহা বড় মনোরম লাগে শুনতে। রসাশ্রিত রসগোল্লা মুখে দিয়ে ফেললুম এমন একটা ভাব আছে। হেইটা কি আমাগো ভাষা নাকি? বুজ়লা না! হেইটা হইল গিয়া দেশি কুত্তার মুখে বিলাতি ডাক। আমাগো ঢাকাইয়া ফ্যালাইয়া থুইয়া কইলকাতার ফুটানি মারতাসে। ডাঁইপিপড়ায় পুটকিতে কামড়াইলে কী ভাষায় চিক্কুর পাড়বো দেখুম’অনে।
অবশ্য নিজের ভাষা নিয়ে বড়াই সকল বাঙ্গালীদের মধ্যে সহজলভ্য নয়। পুজোর ছুটিতে কলকাতা যেতুম। লোকাল ট্রেন, বাসের মধ্যে পিতৃদেব উচ্চৈঃস্বরে জানান দিতেন, এই জ়ানলা দিয়া দ্যাখ হাওড়া ব্রিজ়। বুইচছস বাপন এইটার নাম আছিলো হ্যারিসন রোড। আর আমরা দাঁত কিড়মিড় করতুম। গেঁয়োপনা এইভাবে জাহির না করলেই কি নয়! অবশ্য কে জানে চারপাশের কলকাতার লোকগুলো কিছু বুঝছে না হয়ত। ভাবছে সোয়াহিলি বা পুস্তুতে কথা বলছি আমরা।
বাকি অংশটি এখানে পডু়ন…
Posted in কলকাতা, ঢাকা, বাঙাল, ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, সিলেট, স্মৃতিচারণা | Tagged: আসাম, কলকাতা, ঢাকা, বঙ্গভঙ্গ, বাঙাল, সিলেট, Durgotsav, Hutom Pynachar Naksha, Kaliprasanna Singha, Lord Curzon, Mahesher Gangajatra | 5 Comments »
Posted by bangalnama on July 6, 2009
মধ্যমেধার অভিমানী খাচায় বাঙালিত্বের আহত বাঘ ফের গর্জে উঠেছে। ঢাকে ঢোলে, সেমিনারে, পদযাত্রায়, মায় দুর্গাপুজোর মণ্ডপকল্পনায় বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের শতবার্ষিকী আমোদ একেবারে থইথই। এই রাখিবন্ধনের পুনরাভিনয়, তো ওই প্রবন্ধপত্রের বিশেষ সংখ্যা। এই বামপন্থী কমিটির সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী পথসমাবেশ, তো ওই দক্ষিণপন্থী ক্লাবের দেশবন্দনামূলক নৃত্যনাট্য। সর্বরোগহর শতবার্ষিকী বটিকায় সব আছে— হিন্দু মুসলমান ঐক্য, মহিলামহলের সমর্থন, শিল্পের স্বদেশী জাগরণ, উপনিবেশবাদ বিরোধিতা, এমনকী রবীন্দ্রনাথকে পর্যন্ত হাতে কলমে জাতীয়তাবাদী প্রমাণ করার সুবর্ণসুযোগ। জাতিসত্ত্বার এমন আইকন-চর্চিত ও পলিটিকালি-করেক্ট ছায়াযুেদ্ধর দৃপ্ত মহড়া দেখতে দেখতে কোন পাষণ্ডের না চোখ ছলছল করবে?
এই মহাধামাকায় মিলনমেলায় বাদ সাধে, কার সাধ্যি! শুধু মনে করিয়ে দেওয়া যাক, বাঙালির অাত্মচেতনার এই বিশ্রুত অধ্যায়টির একটি প্রকট পরজাতিবিদ্বেষী মুখও ছিল, উৎসবের ঝলমলে ভঁাজে আজ যাকে সহজেই লুকিয়ে রাখা গেছে, অথচ দরকার পড়লেই আহ্লাদি হাসি গুটিয়ে যে মুখ বার করতে আমরা এখনও কুিণ্ঠত হই না। ২০০৫ কেবল ঔপনিবেশিক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বাঙালি মধ্যবিত্তের জ্বালাময়ী প্যামেফ্লটশিল্পের একশো বছর নয়, তার নিজস্ব প্রভুত্ববাদের বিস্তৃত বয়ানের একশো বছরও বটে। িব্রটিশ-বিরোধী জাতীয়তাবাদের ছায়ায় লতিয়ে-ওঠা যে প্রভুত্ববাদ আমাদের জাতিচেতনায় আষ্টেপৃষ্ঠে, যার বিরুদ্ধে কোনও কথা শোনার আগেই আমরা জানি সে-সব প্রতিক্রিয়াশীল, বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং সাম্রাজ্যবাদী প্ররোচনার শিকার।
বাকি অংশটি এখানে পডু়ন…
Posted in ইস্টবেঙ্গল, কলকাতা, বঙ্গভঙ্গ, রাজনীতি, সিলেট | Tagged: 1905, আসাম, কলকাতা, বঙ্গভঙ্গ, সিলেট, Bengali nationalism, centenary of the partition of Bengal, Charu Mihir, Coochbehar, Kamtapur, Lord Curzon, Manik Barua, Sanjibani, Sumit Sarkar, Tarunram Phookan, Tripura Hitaishini, xenophobia of Bengalees | Leave a Comment »